মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক পাশা

মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক পাশা[১৮৮১-১৯৩৮]

মুস্তাফা কামাল ১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দে স্যালেনিকার এক চাষী পরিবারের জন্ম গ্রহণ করেন।যে পরিবারে তাদের জন্ম,তাদের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ম্যাসিডনের অধিবাসি।তার বাবার নাম ছিল আলি রেজা,মা জুবেইদা। ছেলেবেলা থেকেই মুস্তাফা ছিলেন সকলেন থেকে আলাদা। যখন তার সাত বছর বয়স তখন তার বাবা মারা গেলেন। চাচা এসে তাকে নিজের কাছে নিয়ে গেলেন।চাচার ভেড়াল পাল চরাতে হত।জুবেইদা চাচাকে বলে তাকে স্কুলে ভর্তি করে দিলেন।
সহপাঠীদের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া-ঝাটি মারামারি লেগেই থাকত।কোন বিষয়ে অন্যায় দেখলে মেনে নিতে পারতেন না। জন্ম থেকে তার মধ্যে ছিল বিদ্রোহি সত্তা। একদিন কোন এক শিক্ষকের অন্যায় দেখে স্থির থাকতে পারলেন না।তার সাথে মারামারি করে স্কুল ছাড়লেন।
ইউরোপে বিভিন্ন দেশ দেখে তার মনে হয়েছিল শিক্ষার উন্নতি ছাড়া দেশের উন্নতি সম্ভব নয়।দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অসংখ্য স্কুল খোলা হল।সাত থেকে ষোল বৎসরের ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া বাধ্যতামূলক করা হল।১৯২২ সালে নিরক্ষরতার হাত ছিল শতকরা ৮২ জন।মাত্র দশ বছরের মধ্যে সেই হারকে কমিয়ে ৪২ জনে নামিয়ে আনা হল।
তিনি ধর্মশিক্ষাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা প্রসারের উপর গুরুত্ব দিলেন। আরবি লিপির পরিবর্তে রোমান লিপির ব্যবহার শুরু হল। পৃথিবীর অন্য দেশের সাথে সামজ্ঞস্য বিধানের জন্য বর্ষপঞ্জী সংস্কার করা হল।দশমিক মুদ্রা চালু হল।
শুধুমাত্র দেশের শিক্ষার উন্নতি নয়। ব্যবসা –বাণিজ্য বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দেওয়া হল। দেশের অর্থনেতিক উন্নতির জন্য সমগ্র দেশ জুড়ে রেলপথ তৈরির কাজে হাত দেওয়া হল। তৈরী হল নতুন নতুন পথঘাট। শুধুমাত্র দেশের অভ্যন্তরিণ সংস্কার নয়,বৈদাশিক ক্ষেত্রেও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মৈত্রী চুক্তি স্থাপন করা হল। ১৯৩২ সালে তুরস্ক লীগ অব নেশনস এর সদস্য হল।
সামরিক দিক থেকে যাকে কোন বিপদ না আসে তার জন্যে প্রতিবেশী প্রতিটি দেশের সঙ্গে অনাক্রমণ চুক্তি করা হল।
ইতিমধ্যে কামাল পাশা পর পর চারবার সর্বসম্মতিক্রমে রাষ্টপতি নির্বাচিত হলেন।১৯২৩ সালে প্রথম তিনি নির্বাচিত হন, তারপর ১৯২৭,১৯৩১,১৯৩৫।
তুরস্কের সর্বাত্মক উন্নতির জন্য অত্যাধিক পরিশ্রমের ফলে তার স্বাস্থ্য ক্রমশই ভেঙে পড়ছিল।১৯৩৮ সালের নভেম্বর মাসে তিনি মারা গেলেন।
যদিও কামাল পাশার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় তিনি একনায়তান্ত্রিক শাসন চালু করেছিলেন, সমস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত করে দেশ পরিচালনা করেছেন,তবুও তিনি তুরস্কের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ পুরুষ।যে পরিস্থিতিতে তিনি দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন তখন কঠোরতা ছাড়া উন্নতির কোন পথই খোলা ছিল না।

Post a Comment

Note: Only a member of this blog may post a comment.

[blogger]

MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget