July 2019

ওয়ার্ডপ্রেস হচ্ছে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিএমএস)। এটি সার্ভার সাইড স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ পিএইচপি এবং মাইএসকিউএল ডাটাবেজ দিয়ে তৈরি। এটি একটি ওপেনসোর্স ব্লগিং সফটওয়্যার যা ফ্রিতে ব্যবহার করা যায়। ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে খুব সহজেই মাত্র কয়েক মিনিটে একটি ওয়েব সাইট তৈরি করা যায়, এমনকি কোন প্রকার টেকনিক্যাল জ্ঞান ছাড়াই! আর এ কারণেই বিশ্বব্যাপী ওয়ার্ডপ্রেসের এত জনপ্রিয়তা।

কেন ওয়ার্ডপ্রেস?


সবাই চায় সে যেন তার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলোকে খুব সহজেই ম্যানেজ করতে পারে। সেজন্য প্রয়োজন কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তৈরি করা অনেক ব্যয়বহুল। এক্ষেত্রে খরচ বাঁচানোর জন্য অনেকে ফ্রি সিএমএস ব্যবহার করে থাকে, আর এক্ষেত্রে ওয়ার্ডপ্রেসই থাকে সবার প্রথম পছন্দ। সিএমএসগুলোর মধ্যে ওয়ার্ডপ্রেসের এত জনপ্রিয়তার কয়েকটি কারণ হল- এর ব্যবহারকারী বান্ধব ইন্টারফেস, খুব সহজেই কোন ফিচার যোগ করতে পারার সুবিধা এবং সার্চ ইঞ্জিন বান্ধব স্ট্রাকচার। ওয়ার্ডপ্রেস প্রথমে ব্লগিং সফটওয়্যার হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও, বর্তমানে পোর্টফোলিও সাইট থেকে শুরু করে কর্পোরেট, অনলাইন সংবাদপত্র, সোশ্যাল মিডিয়া, ইকমার্স সাইট পর্যন্ত ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। ওয়ার্ডপ্রেস এর হাজার হাজার ফ্রি থিম এবং প্লাগইন এই কাজটিকে আরও সহজ করে দিয়েছে!

কারা ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে?

ইন্টারনেটে জনপ্রিয় ১০ লাখ ওয়েবসাইটের ১৬.৭ ভাগ ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি। যেসব ওয়েবসাইট কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে থাকে তার শতকরা ৫৫.১ ভাগ ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে থাকে। অন্য এক সমীক্ষায় জানা গেছে,  প্রতিদিন ১ লাখের বেশি ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করা হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় পত্রিকা নিউ ইয়র্ক টাইমস এর ব্লগ ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি। তাছাড়া জনপ্রিয় সংবাদ সংস্থা সিএনএন, রয়টার্স, ফোর্বস, সোশ্যাল মিডিয়া নিউজ ব্লগ ম্যাশেবল এর ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি।

ওয়ার্ডপ্রেস থিম কি?

ওয়ার্ডপ্রেস থিম হল কতগুলো ফাইলের সমষ্টি যা ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের ডিজাইন এবং স্ট্রাকচার নির্ধারন করে। যেমন: একটি ওয়ার্ডপ্রেস সাইট দেখতে কেমন হবে তা ঐ সাইটের থিমের উপর নির্ভর করে। ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডিরেক্টরিতে হাজার হাজার ফ্রি থিম পাওয়া যায়।
তবে সবাই চায় তার নিজের কিংবা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটটি ইউনিক এবং চমৎকার ডিজাইনের হোক। এই কারণেই কেউ কেউ প্রিমিয়াম থিম কিনে নেয়, আবার অনেকেই চায় নিজের চাহিদা এবং পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন। কেউ কেউ আবার ওয়ার্ডপ্রেস প্রিমিয়াম থিম কিনে নিয়ে সেটিকে কাস্টোমাইজ করে নেয়। এভাবেই তৈরি হয় ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট বা কাস্টোমাইজেশনের কাজের ক্ষেত্র এবং যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্টের চাহিদা

ওয়ার্ডপ্রেসের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপারদের কাজের পরিধি। এক সমীক্ষায় জানা গেছে, ওয়ার্ডপ্রেস এর ব্যবহারকারীদের শতকরা ৩৫ ভাগ প্রিমিয়াম থিম অথবা নিজের কাস্টোমাইজ করা থিম ব্যবহার করে থাকেন। আর প্রতিদিন ১ লাখ নতুন ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে। এখানে ৩৫ শতাংশ প্রিমিয়াম ব্যবহারকারী ধরলে প্রতিদিন নতুন নতুন গ্রাহক তৈরি হচ্ছে ৩৫ হাজার। বছরে নতুন গ্রাহক  হচ্ছে ১ কোটি ২৭ লাখ। আর প্রচুর ব্যবহারকারী যেহেতু নিজেদের মত করে ডিজাইন তৈরি করে নেন তাই এক্ষেত্রে ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টোমাইজেশনের কাজের ক্ষেত্রও ব্যাপক। পাশাপাশি প্লাগইন ডেভেলপমেন্ট সেক্টরেও ব্যাপক কাজের সুবিধা রয়েছে।

ওয়ার্ডপ্রেস ডেভলপারের আয়ঃ

ছোট এবং মাঝারি ব্যবসা থেকে শুরু করে বড় বড় কর্পোরেট এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও এখন ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস দিয়ে নিজেদের ওয়েবসাইট তৈরি করছে। আর এ কারণেই ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপারদের চাহিদা বাড়ছে হু হু করে! বাংলাদেশি অনেক ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার রয়েছেন যারা ফ্রিল্যান্সার এবং ওডেস্ক সহ বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে ঘন্টায় ৩০ থেকে ৪০ ডলার রেটে কাজ করে থাকেন। একজন ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার কাজ শুরু করতে পারেন ন্যূনতম ১০ থেকে ১২ ডলার প্রতি ঘন্টা রেটে। অর্থ্যাৎ দিনে যদি কেউ ৮ ঘন্টা কাজ করেন তবে একজন ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপারের প্রাথমিক আয় শুরু হবে প্রতি দিন ৮০ থেকে ১০০ ডলার, মাসে ৩ হাজার ডলার। আর এক্ষেত্রে আয়ের কোন লিমিটেশন নেই বললেই চলে, স্কাই ইজ দ্যা লিমিট বসেস!! প্রাথমিক পর্যায়ে আমি নিজে যখন মার্কেটপ্লেসে ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্টের কাজ শুরু করেছিলাম তখন প্রতি ঘন্টার চার্জ ছিল ১৫ থেকে ২০ ডলার। এখন সেটি বেড়ে দাড়িয়েছে প্রতি ঘন্টা ৩৫ ডলারে!



এ তো গেল ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসগুলোর কথা, আবার একজন ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার চাইলে ফ্রিল্যান্স কাজ না করেও নিজস্ব ওয়ার্ডপ্রেস প্রোডাক্ট তৈরি করেও বিশাল আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে পারেন। যেমন- ওয়ার্ডপ্রেস থিম তৈরি করেও সেগুলো বিক্রি করতে পারেন বিভিন্ন থিম মার্কেটপ্লেসে। থিম বিক্রির জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস থিমফরেস্টের কর্পোরেট ক্যাটেগরির সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া থিমগুলোই একবার দেখুন, কি পরিমাণ রেভিনিউ এসেছে একেকটা থিম থেকে!! ইউ ডিজাইন নামে একটি থিম রয়েছে থিমফরেস্টে, যেটি বিক্রি হয়েছে ৮ কোটি টাকা!! এখনও প্রতিদিনই বিক্রি হচ্ছে এ থিমটি। এর পরের থিমগুলোও বিক্রি হয়েছে ৬ কোটি টাকা-৭ কোটি টাকা!! চিন্তা করে দেখুন একবার, এক থিম ডেভেলপ করে ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপাররা কি পরিমাণ টাকা ঘরে নিচ্ছেন। থিম বিক্রির এ মার্কেটপ্লেসে থিম বিক্রির গড় হার ১০ লাখ টাকা করে। অর্থাৎ সময় এবং নিজের ক্রিয়েটিভিটিকে কাজে লাগিয়ে থিম তৈরি করেও বিপুল পরিমাণ আয় করার সুযোগ রয়েছে। বিপুল পরিমাণ এ অর্থের একটা অংশ আসতে পারে নিজের ঘরেও!
কেবল প্রোডাক্ট কিংবা ফ্রিল্যান্স ক্যারিয়ারই নয়, কর্পোরেট এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতেও এখন ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপারদের চাহিদা অনেক। বিদেশি কোম্পানিগুলোতে ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপারদের প্রচুর চাহিদা, আর এখন বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপারদের চাকুরির সুযোগ বাড়ছে।
ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট এখন এমন একটি ক্ষেত্র, যেখানে কাজের আসলে কোন অভাব নেই। বিশাল এই কাজের ক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য কেবল প্রয়োজন দক্ষতা। আপনার যদি মনোবল আর ইচ্ছা থাকে, তবে এই দক্ষতা অর্জন কোন ব্যাপারই নয়।

যা জানতে হবেঃ

ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করার জন্য প্রথমে পিএইচপি কোডিং জানতে হবে।  সেই সঙ্গে এইচটিএমএল, সিএসএস এবং জাভাস্ক্রিপ্ট জানার প্রয়োজন পড়বে। আর কেবল ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টোমাইজেশনের জন্য এইচটিএমএল, সিএসএস এবং ওয়ার্ডপ্রেস ফ্রেমওয়ার্কেরও ব্যবহার জানা থাকলেই চলবে। নতুন কেউ ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্টে এসে ভালভাবে শিখতে সময় লাগবে ২ থেকে ৬ মাস। তবে দেড় থেকে ২ মাসের মধ্যেই ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টোমাইজেশন শেখা যায়। আর কাজ করতে করতেই যাওয়া যায় অ্যাডভান্স লেভেল পর্যন্ত। ইন্টারনেটে ওয়ার্ডপ্রেসের বিভিন্ন টিউটোরিয়াল এবং ভিডিও পাওয়া যায়। যেগুলো দেখে অনেক কিছু শেখার সুযোগ রয়েছে।
ওয়ার্ডপ্রেসের ব্যবহারকারি যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে কাজের সুযোগও।
যাঁরা প্রফেশনাল ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার হতে চান তাঁদের জন্য অগ্রিম শুভ কামনা।

মেঘেদের সরিয়ে রাজহাঁসের মতো ভেসে ভেসে এগিয়ে চলেছিল আমাদের প্লেন। ভিতরে চুপ করে ভাবছিলাম, এই অস্থির সময়ে ভূস্বর্গে যাওয়া কি ঠিক হচ্ছে? এমন সময়ে সামনের আসন থেকে বিস্মিত চিৎকার। সকলের দেখাদেখি জানালা দিয়ে তাকালাম। এ কী, নীচে তো দাবানল লেগেছে! বিমান সেই উপত্যকা ঘেঁষেই শ্রীনগর বিমানবন্দরে নামল। ভুল ভাঙল আমারও। সবুজ পাইনবনের ধার ঘেঁষে চিনার গাছের সারি। তারই টকটকে লাল পাতায় রঙের আগুন জ্বলছে!
সেই মুগ্ধতা বইতে বইতে শ্রীনগরের বিমানবন্দর ছেড়ে শহরের রাস্তায় এলাম। কিন্তু কোথায় বারুদের গন্ধ? এ তো গোলাপের গন্ধভরা হিমেল বাতাস। বুক ভরে সেই ঘ্রাণ নিচ্ছি, মাথার উপর দিয়ে চলে গেল সেনাবাহিনীর কপ্টার। আমাদের বুকের ভিতরে আবার দপ করে উঠল ভয়। মনে ভিড় করল রক্তাক্ত কোলাজ। সেনার কঠিন চোয়াল, জানালা থেকে তাক করা জঙ্গির রাইফেল, আন্তর্জাতিক টানাপড়েনে যন্ত্রণাবিদ্ধ কাশ্মীরের মুখ। সেই সব চিন্তা মিষ্টি হাসিতে মুছে দিলেন গাড়ির চালক আমির ভাইজান। বললেন, ‘‘কিছু নিয়ম বেঁধে দিয়েছে আর্মি। সে ব্যাপারে গাইড করে দেব। তবে সে সব জায়গা ছাড়াও এই ভ্যালি বেহদ খুবসুরত।’’

ভূস্বর্গ কাশ্মীরের অপরূপ সৌন্দর্য।

প্রমাণ পেলাম পরের দিনই। শ্রীনগরের চম্পা-চামেলি-গোলাপের বাগিচায় হৃদয় ভরিয়ে, শিকারার বাহারি বাজারে ব্যাগ উপচিয়ে ফের সওয়ার হলাম আমির ভাইয়ের বাদামরঙা গাড়িতে। পাহাড় চিরে সেই বাহন ছুটল পহলগামের দিকে। আশপাশে ঠিক গ্রিমভাইদের রূপকথার বইয়ের মতো দেখতে বাড়িঘর। তাদের তেকোনা চালা, লম্বাটে চিমনি। বরফ পড়েই যাতে চট করে ঝরে যায়, তাই এমন বিলিতি গড়ন। ভিতরের বন্দোবস্ত নাকি প্রাসাদকে লজ্জা দেবে। ‘‘আহা, একটু যদি থাকতে পেতাম!’’ শুনতে পেয়েই চালক বললেন, ‘‘বেশক জনাব। সবই হোম স্টে। আপনাদের পথ চেয়েই তো বাঁচে মানুষগুলো।’’
পহলগাম পৌঁছতেই সাইট সিয়িংয়ের জন্য ছেঁকে ধরল টাট্টুঘোড়ার মালিকরা। এখান থেকে আর গাড়ির রাস্তা নেই। ছটফটে ঘোড়ারা আমাদের খুটখুট করে নিয়ে গেল ভিউ পয়েন্টগুলোয়। দেখাল দারুণ শক্তিমান গুজ্জরদের গ্রাম, রাজা জয় সিংহের মন্দির, পাহাড়ের খাঁজের তুলিয়ান আর বৈশরণ লেক। টলটলে শেষনাগ হ্রদ। সেখানেই আঁধার হল। আমরাও ঝিলমিলে ঝিলমের পাড় ধরে এঁকেবেঁকে শ্রীনগরে ফিরলাম। পথে দেখলাম, দূর পাহাড়ের গায়ে চিকচিকে বিন্দু। শুনলাম, ওগুলো গ্রামের আলো।
পর্বতের ভিতর দিয়েই আরু স্যাংচুয়ারি যাওয়া যায়। তাই চিতাবাঘ তাড়াতে সারা রাত মশাল জ্বালে ওরা। আরও বেশি অ্যাডভেঞ্চারের লোভে পরদিন রওনা দিলাম গুলমার্গে। সেখানে বারো মাস বরফ। তার মধ্য দিয়ে আকাশদোলা গন্ডোলা চলেছে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ের স্নো স্টেশনে। সেখানে সাহসীরা মাউন্টেন-গ্লাস পরে স্কি করছে। একটু নীচে শান্তশিষ্ট গলফ কোর্স। পাশেই বরফের রেণু মাখা টিউলিপ বাগান। চার ধারে কত ক্রিসমাস ট্রি! কে বলে কাশ্মীর মানেই হানাহানির ভয়ে সুনসান তল্লাট? এ তো জুলাইতেই বড়দিনের মেলা বসেছে জমজমাট। ফুর্তিবাজরা শিস দিতে দিতে চলেছে ট্রেকে। অনন্তনাগের হিমকুণ্ডে ক্লান্তি ধুয়ে নেবে। অবন্তীপুরে গিয়ে পাণ্ডবদের মহল খুঁজবে। আমি ওদের জিজ্ঞেস করি, ‘‘সে তো পুলওয়ামার পাশে। যেতে দেয়?’’ তা শুনে গোটা দল হেসে লুটোপুটি। ‘‘পাহারা দিচ্ছেন স্বয়ং হিমালয়। বিপদ কীসের?’’ বলেই তারা শশব্যস্তে হাঁটা লাগাল ফিরোজপুরি ক্যানালের দিকে। সেখানে আজ ট্রাউট মাছ ধরার উৎসব আছে।
উপত্যকার অন্য ধার দিয়ে সোনমার্গের গিরিপথে যাওয়া যায়। সেই পাকদণ্ডীতে অনেক সুড়ঙ্গ। পাহাড় ফুঁড়ে কেবলই বেরোচ্ছে ঝরনা। তার পাশে তাঁবু খাটিয়ে একটু জিরিয়ে নিচ্ছেন অভিযাত্রীরা। আর একটু দূর যেতেই হুড়মুড়িয়ে নামতে থাকি উতরাই পথে। তখনই হুঙ্কার দিতে দিতে সামনে এসে দাঁড়াল পান্না রঙের বিশালদেহী এক নদীপুরুষ।
সেই হল সিন্ধু নদ। তার উদ্দাম জলরাশি পাহাড় চুরমার করে দিচ্ছে। গুমগুম শব্দ উঠছে চরাচর জুড়ে। যেন নদীর রাজা বজ্রনির্ঘোষে হুকুম দিচ্ছে, ‘‘আমার এই পাড় ধরে লাদাখ চলো। সে দিকেই আমার ঘর। তিব্বত। মানসরোবর।’’ সম্মোহিত আমি এগিয়ে যাই। গাইড বলেন, ‘‘ও দিকে অমরনাথ। যেতে গেলে শ্রীনগর ফিরে পারমিট করাতে হবে।’’ সময়-প্রস্তুতি নিয়ে আসিনি বলে সিন্ধু নদের সে কী অভিমান! পাথরে ঘা দিতে দিতে ফুঁসতে ফুঁসতে ছুটোছুটি করে। তখনই উচ্চশৃঙ্গ গিরিরাজকে সাক্ষী মেনে কবুল করি, ফিরব... ফিরব... ফিরব...। শুধুমাত্র মুশকিল হয়ে গেল একটাই-আমি যে, উপত্যকাকে আপনাদের হয়েও কথা দিয়ে এসেছি!

জম্মুর জলে ও স্থলে


"কাশ্মীর" থেকে জম্মুকে আলাদা করেছে পীরপঞ্জাল পর্বতশ্রেণি। পঞ্জাবঘেঁষা এই শহরটি ভারতের উত্তরতম রাজ্যের শীতের রাজধানী। দুর্গ-মন্দিরে সাজানো জম্মু দেখতে অন্তত দিন তিনেক সময় লাগে। জম্মু বাসস্ট্যান্ড থেকে মাত্র দু’কিলোমিটারেই বিশাল প্রমোদ-উদ্যান চৌগান। শহর থেকে মাত্র
৬৪ কিলোমিটার দূরে রিয়াসি-তে বুনো ঝোপঝাড়ের মধ্যে চারশো বছর ধরে জেগে আছে জারোয়ার সিংহের ভীমগড় ফোর্ট। রাজপুত স্থাপত্য ও মুঘল শৈলীর অনবদ্য মিশেল। অন্দরে ভীমার্জুনের মন্দির, ঘাটকাটা পুকুর, ছোট-বড় ঘর, অস্ত্রশাল। এই দুর্গের দেওয়ালে কান ঠেকালে চন্দ্রভাগার কুলকুল ধ্বনি স্পষ্ট শোনা যায়।
জম্মু থেকে মাত্র ২৮ কিলোমিটার দূরে চেনাবের তীরে আখনুর দুর্গ। এখানেই গুলাব সিংহকে রাজমুকুট পরিয়ে দেন রঞ্জিৎ সিংহ। আর রঙে-রূপে ‘ছোটা কাশ্মীর’ বলে পরিচিত হল ভাদরওয়া ভ্যালি। সেখানে তিরতির করে বয়ে চলে নীরু নদী। হিমাচল সীমান্তে রয়েছে সিন্ধু সভ্যতার যুগের জনপদ বিশ্বস্থলী, আজকের বাসোলি। হরপ্পা-মহেঞ্জোদড়োর ঢঙের আশ্চর্য নগর-পরিকল্পনা তার, তেমনই কেতার ভূগর্ভস্থ নালা-প্রণালী। আর আছে পাথরকাটা সায়র, পুরোহিতের আবাস, বৈদ্যের বাড়ি, রাজার সাতমহলা। সেখানে অন্তত কয়েক হাজার বছরের ইতিহাস বসত করে। নিসর্গের স্বাদ চাইলে শৈলশহর পানিটপ-কে টপকে সনাসারে যেতে হবে। পেয়ালা আকৃতির এই ঘাসভূমে বিরাট বিরাট ফার গাছ, মধ্যিখানে পশু চরে বেড়ায়। আর মানুষ আসে নয়নাভিরাম রিসর্টে আরাম খুঁজতে।
জম্মু রেলস্টেশন থেকে জাতীয় সড়ক ধরে ৪৮ কিলোমিটার উজিয়ে গিয়ে ২৮০০ ফুট উঁচুতে কাটরা শহর। সেখান থেকে ঘোড়ার পিঠে বা ডুলি চড়ে চড়াই-উতরাই পথে চলে আসুন দরবারে। এখানেই দর্শন দেবেন মা বৈষ্ণোদেবী।

যাত্রাপথ

প্রত্যেক দিন দিল্লি থেকে জম্মু হয়ে শ্রীনগরে বিমান উড়ছে। কলকাতা থেকে রয়েছে জম্মু-তাওয়াই এক্সপ্রেস। জম্মু পৌঁছবে পরের দিন। পুজোর ছুটিতে বিশেষ ট্রেনও রয়েছে।

খাবারে কাশ্মীরি জোশ

কাশ্মীরের রুচিসম্পূর্ণ খাবার

ঠান্ডার দেশ। তাই শরীর গরম রাখতে মাছ-মাংসের এলাহি আয়োজন। তবে রসুনগন্ধি মটন রোগন জোশ, স্বাদু পালক চিকেনের পাশাপাশি টক-মিষ্টি  দম-আলু খেতে ভুলবেন না। ওয়াজ়ওয়ান এ রাজ্যের বিখ্যাত থালি। তাতে সাজানো মেথি আর তবক মাজ়, কয়লায় সেঁকা ভেড়ার কাবাব, ধনিয়ালি কোর্মা, মাংসের কোফতা রিশতা, মশলাদার দইয়ে মজানো মাংসের বড়া গুস্তাবা আর অজস্র সুখাদ্য। সঙ্গে চটকদার আচার। শেষ পাতে আখরোটের চাটনি, ঠান্ডা দই ঘুঁটে তৈরি ঘন লস্যি। সুজি, ঘি, ড্রাই ফ্রুটের হালুয়া মেলে রাস্তার ধারে। তার সঙ্গে চুমুক দিন নোনতা চায়ে। জ়াফরান ফোটানো ‘কেহওয়া’ খেলে সঙ্গে নিন সাংগ্রাম। তার পরত ভাঙলে মিষ্টি পুর মাখনের মতো গলবে।

খেজুরের পরিচিতি

তামার বা খেজুর শব্দটি আল কোরআন ও রাসূলের বাণীতে অনেক বার এসেছে। খেজুর আমাদের সবার অতি পরিচিত একটি ফল। আর খেজুর জনপ্রিয় ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি ফল। খেজুরকে সাধারণত বলা হয় রাজকীয় ফল। শুধু এর অতুলনীয় স্বাদ আর গন্ধের জন্য নয় বরং খেঁজুরের খ্যাতি তার অসাধারণ রোগ নিরাময়ের জন্যও। আপনার সারা দিনের ক্লান্তি দুর করতে একটি খেজুর আপনার জন্য যথেষ্ট। সামনে পবিত্র রমজান মাস আর রমজানে খেজুর দিয়ে ইফতার করা, মুমিন মুসলিমদের জন্য আল্লাহর বিশেষ একটা নিয়ামত। সারাদিন রোজা রাখার পর আমরা সাধারণত খেজুর খেয়ে ইফতার শুরু করি। মুমিন-মুসলিমদের জন্য খেজুর খেয়ে ইফতার করা সুন্নত। তাই সাধারণত রমজানে খেজুরের কদর একটু বেশি বেড়ে যায়। খেজুর না থাকলে আমাদের ইফতার যেন পরিপূর্ণতা পায় না।
আমরা কম-বেশি সকলেই জানি খেজুর খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক। আর এই সুন্নত মুবারকের মধ্যেই আছে সমস্ত প্রকার ভালাই। আর আমাদের পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মাঝেও খেজুরের অনেক অনেক গুণাবলী ও পুস্তিগুনের কথা বর্ণনা করা আছে। তারপরও বর্তমান সময়ের বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে খেজুর নিয়ে অনেক গবেষণা করে খেজুরের গুনাগুন সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। গবেষণাই তারা বলেছেন, পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ খেজুর অসাধারণ ঔষধিগুনে পরিপূর্ণ একটা ফল। সারা বছর খেজুর খাওয়া আপনার স্বাস্থের পক্ষে খুবই উপযোগী।

খেজুরের পুষ্টিমান:

সাধারণত বলা হয়ে থাকে, বছরে যতগুলো দিন আছে, খেজুরে তার চেয়ে বেশি গুণ আছে। সাধারণত প্রতি ১০০ গ্রাম পরিস্কার ও তাজা খেজুর ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি রয়েছে যা থেকে ২৩০ ক্যালরী শক্তি উৎপাদন করে, ৭৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২.৫ গ্রাম প্রোটিন এবং ০.৪ গ্রাম ফ্যাট। গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ছাড়াও মেলে অত্যাবশ্যক ভিটামিন উপাদান। এ ছাড়াও মেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যামাইনো অ্যাসিড। খেজুরে স্বল্প পরিমাণে পানি থাকে যা কিনা শুকানো অবস্থায় তেমন প্রভাব ফেলে না।সাধারণত পাকা খেজুরে প্রায় ৮০শতাংশ চিনিজাতীয় উপাদান রয়েছে। বাদ-বাকী অংশে খনিজ সমৃদ্ধ বোরন, কোবাল্ট, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম ফ্লুরিন, ম্যাগনেসিয়াম, এবং জিঙ্কের ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান রয়েছে।
সাধারণত কচি খেজুর পাতা সবজি হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়। এছাড়াও, খেজুরের ফুলও খাবার উপযোগী। সনাতনী ধাঁচে স্ত্রী ফুল সাধারণত ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনে বিক্রয় করা হয়। আপনি চাইলে ফুলের কুঁড়ি দিয়ে সালাদ কিংবা শুকনো মাছ বা শুঁটকী দিয়ে চাটনী তৈরী করে রুটির সাহায্যে খেতে পারেন।

খেজুরের উৎপত্তি:

সারা পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে চারশ’ জাতেরও বেশি খেজুর পাওয়া যায়। সাধারণত তুরস্ক, ইরাক এবং উত্তর আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চল মরক্কোয় খেজুরের উপযোগিতা বা উৎপত্তি প্রাচীনকাল থেকেই রয়েছে। পবিত্র বাইবেলে খেজুরের কথা পঞ্চাশ বারেরও অধিক জায়গায় উল্লেখ রয়েছে। ইসলামী দেশগুলোতে পবিত্র রমজান মাসে ইফতারীতে খেজুরের আইটেম রাখা অনস্বীকার্য। শুধু তুরস্ক বা ইরাকে নয় মেদজুল এবং দেগলেত নূরজাতীয় খেজুরের চাষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা এবং দক্ষিণ ফ্লোরিডায় এখন খেজুরের চাষ করা হয়ে থাকে।
হজরত মারইয়াম (আ.) যখন প্রসব-বেদনায় কাতর হয়ে উঠেন, সে সময়ে তিনি খেজুর গাছের নিচে অবস্থান করছিলেন, তখন আল্লাহ তাকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘তুমি এ খেজুর গাছের কাণ্ড তোমার দিকে নাড়া দাও, (দেখবে) তা তোমার ওপর পাকা ও তাজা খেজুর ফেলছে।’ -সূরা মারইয়াম: ২৫

খেজুরের খাদ্য ও পুষ্টি উপকারিতাসমূহ:

খেজুরের উপকারিতায় সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অনেক বাণী এসেছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেহ সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সেদিন তাকে কোনো বিষ ও যাদু ক্ষতি করতে পারবে না। আজওয়া খেজুর হলো মদিনার উৎকৃষ্ট মানের খেজুর।’ -সহিহ বোখারি ও মুসলিম। খেজুরের স্বাস্থ্য উপযোগিতা বলে শেষ করা যাবে না। খেজুরের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাকৃতিক আঁশের আধিক্য থাকায় এর উপকারিতা ও গুরুত্ব অনেক। খেজুর তিনটি, পাঁচটি বা সাতটি বেজোড় করে খাওয়ায় শরীরের উপকারিতা সবচেয়ে বেশি। এজন্য হাদিসে বেজোড় সংখ্যার কথা বলা হয়েছে। খেজুরে কী আছে যে, আমরা এতো গুরুত্বের সঙ্গে খেজুর খাই? আসুন চটজলদি জেনে নিই খেজুরের গুনাগুন।

১) মস্তিষ্ক সচল রাখেঃ খেজুরের সব থেকে বড় একটা সুবিধা হল খেজুর মস্তিষ্ককে প্রাণবন্ত রাখে। আমাদের ক্লান্ত শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তির যোগান দিতে সক্ষম এই খেজুর।

২) গ্লুকোজের অভাব রোধেঃ সাধারণত রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার পর পেট খালি থাকে বলে শরীরে গ্লুকোজের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। খেজুর সেটা দ্রুত পূরণ করতে সাহায্য করে।

৩) কোষ্ঠকাঠিন্য রোধেঃ তুলনামূলকভাবে যেসব খেজুর একটু শক্ত সেইসব খেজুরকে পানিতে ভিজিয়ে (সারা রাত) সেই পানি খালি পেটে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য অনেকাংশে দূর হয়।

৪) গর্ভবতী মায়ের খাবারঃ সাধারণত যেসব মায়েরা গর্ভবতী বা ৭/৮ মাস সময় থেকে গর্ভবতী মায়েদের জন্য খেজুর একটি উৎকৃষ্ট খাদ্য। সাধারণত এই সময়টা গর্ভবতী মায়েদের শরীরে অনেক দুর্বলতা কাজ করে। তখন খেজুর মায়েদের শরীরের এই দুর্বলতা কাটাতে অনেক সাহায্য করে থাকে এবং ডেলিভারীর পর মায়েদের শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তপাত বন্ধ করতে ও খেজুর সহায়ক ভূমিকা পালন করে এবং বাচ্চা প্রসবের পরবর্তী সময়ে শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে খেজুর কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

৫) শক্তিদায়ক খাবার: খেজুরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালরি থাকে বিধায় যারা একটু দূর্বল স্বাস্থ্যের অধিকারী, সামান্য পরিশ্রমে হয়রান হয়ে যায় তাদের জন্য খেজুর নিয়মিত একটা খাবার বললেই চলে। কেননা খেজুর নিয়মিত খেলে আপনার শরীর ও মন দুটাই ভাল থাকবে।

৬) ক্যান্সার রোধেঃ আমাদের পেটের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে খেজুর। এছাড়াও আমাদের মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধেও এই ফল বেশ কার্যকরী।


৭) হার্টের সমস্যা রোধেঃ বিশেষ করে যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য খেজুর খুবই উপকারী। কেননা খেজুর দুর্বল হার্টকে মজবুত করতে সক্ষম। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেজুর ব্লেন্ড করা জুস খেলে হার্টের সমস্যায় ভুক্তভোগী ব্যক্তি কিছু দিনের মধ্যে ভাল সমাধান পাবেন।

৮) বদহজম রোধেঃ আমাদের মুখের লালাকে ভালোভাবে খাবারের সঙ্গে মিশতে সাহায্য করে খেজুর। ফলে আমাদের বদহজম অনেকাংশে দূর হয়। হৃদরোগ কমাতেও খেজুর বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

৯) দুর্বলাত রোধে: আমাদের দেহ ও মনকে সচল ও কার্যক্ষম রাখতে শক্তির প্রয়োজন। এর অভাবে আমাদের দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়,শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আমাদের মানসিক অবসাদ সৃষ্টি হয়ে থাকে। এসব ক্ষেত্রে শর্করা জাতীয় খাদ্য শক্তির উৎস হিসেবে বিশেষ কাজ করে।আর এই খেজুর শর্করা জাতীয় খাদ্য হিসেবে খাদ্য শক্তির উল্লেখযোগ্য উৎস হিসেবে কাজ করে।

১০) শরীরের ব্যাধি রোধেঃ খেজুরের মধ্যে থাকা প্রয়োজনীয় পরিমাণে উচ্চমাত্রার শর্করা, ক্যালরি ও ফ্যাট সম্পন্ন খেজুর সাধারণত জ্বর, মূত্রথলির ইনফেকশন, যৌনরোগ, গনোরিয়া, কণ্ঠনালির ব্যথা বা ঠান্ডাজনিত সমস্যা, শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী।

১১) অঙ্গক্ষয় প্রতিরোধেঃ সাধারণত যারা নেশাগ্রস্ত তাদের অঙ্গক্ষয় প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে খেজুর। আপনার স্বাস্থ্য ভালো করতে চাইলে বাড়িতে তৈরী ঘিয়ে ভাজা খেজুর ভাতের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনার মুখের রুচি দিগুণ বৃদ্ধি পাবে। খাবারের প্রতি আগ্রহ বাড়াবে।

১২) প্রয়োজনীয় উপাদানঃ খেজুরের মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিমাণে তেল, ক্যালসিয়াম, সালফার, আইরন, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, কপার এবং ম্যাগনেসিয়াম বিদ্যমান যা সুস্বাস্থের জন্য অতি দরকারি।

১৩) হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখতেঃ আমাদের সুস্থ হৃদপিন্ডে দেহযন্ত্রে স্বাচ্ছন্দ এবং সতেজ বিধান করে এমন শক্তিদায়ক বা বলবর্ধক ঔষধ হিসেবে খেজুরের জুড়ি নেই বললেই চলে।

খেজুরের ঔষধি গুনাবলী:

১) বর্শ্য (রিকেট) রোগে: মেদোবহ স্রোতের ক্ষয় হতে থাকলেই সাধারণত এই রোগ দেখা দেয়। বিভিন্ন বয়সে এই রোগের নামকরণ বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। সাধারণত শিশুদের এই রোগ হলে রিকেট বলা হয় নবপ্রসূতির হলে বলে শুকনো সুতিকা। ৮-১০ বছরের ছেলে-মেয়েরা আস্তে আস্তে শুকিয়ে যায়। এসব ক্ষেত্রে আপনি একটা কাজ করতে পারেন ১৫-২০ গ্রাম খেজুর নিযে ৩ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে দেড় কাপ পরিমাণ নামিয়ে ১৪-১৫ দিন খাওয়ালে রিকেট রোগ অনেকাংশে ভাল হয়ে যাবে।

২) রক্তপিত্তে: সাধারণত এ অবস্থায় মাঝে মাঝে গালা দিয়ে প্রচুর রক্ত পড়ে একবার রক্ত দেখা দিলে আবার ৩-৪ মাস দেখা যায় না। আবার একটা সময় গলা সুড়সুড় করে সাসির সাথে একটু একটু রক্ত দেখা দেয়। এক্ষেত্রে খেজুরের ঔষধি গুনাবলীর ব্যবহার মতে ১৫-২০ গ্রাম পিন্ড খেজুর ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রেখে ২-৩ ঘন্টা পরে চটকে ছেঁকে যে রসালো পানি পাওয়া যাবে তা খাওয়াতে হবে। এতে বেশ উপকার পাওয়া যাবে।

৩) শুক্রবাহ স্রোত ক্ষয়ে: সাধারণত যাদের রৌদ্র একেবারে সহ্য হয় না এবং স্ত্রী সহবাসে দুর্বলতা আছে এবং সেই সাথে কোষ্ঠকাঠিন্যও আছে তারা যদি নিয়মিত ১৫-২০ গ্রাম খেজুর আধা লিটার পানি এবং ১০০ মিলিঃ লিটার দুধ মিশিয়ে এক সাথে ভাল করে সিদ্ধ করে এক কাপ আন্দাজে নামিয়ে ওই রসালো পানি পান করলে উপকার পাওয়া যাবে।

৪) খুসখুসে কাশি: সাধারণত যাদের খুসখুসে কাসি হয় তারা যদি এটাকে উপেক্ষা করে বা গুরুত্ব সহকারে না দেখে; তবে তা থেকে বড় ধরনের কাশের রোগ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি একটা কাজ করতে পারেন ২০-২৫ গ্রাম পিন্ড খেজুর, ২ কাপ গরম পানিতে সাড়া রাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ওই খেজুর চেটকিযে রসালো সরবতের মতো করে খেতে হবে। এই ভাবে আপনাকে অন্ততঃ ১৫ দিন খেলে খুসখুসে কাশিতে আরাম হবে।

পরিশেষে...

সাধারণত যে কোনো ফলের চেয়ে খেজুরের পুষ্টিগুণ বেশি। এটা আল্লাহ্‌র বিশেষ একটা দয়া আমাদের জন্য। তাইতো বলা হয়ে থাকে বছরে যতোগুলো দিন আছে, খেজুরে তার চেয়েও বেশি গুন রয়েছে। আপনি শুধু রমজান মাসের জন্য নয় সারা বছর পরিবারের সবার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই ফলটিকে রাখতে পারেন। এতে করে আপনার শরীর ও মন দুটাই সুস্থ থাকবে। খেজুরের বিচিও রোগ নিরাময়ে বিশেষ ভূমিকা রাখে। খেজুরবিচিচূর্ণ মাজন হিসেবে ব্যবহার করলে দাঁত সাধারণত পরিষ্কার হয়। তাছাড়া খেজুর ফুলের পরাগরেণু পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করে শুক্রাণু বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

সম্প্রতি আমার কিছু পরিচিতজন ও ফেসবুক বন্ধু এসইও সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন করে। আমি যথারীতি সেগুলো উত্তর দিয়েছি। তবে যারা এসইও নিয়ে কাজ করছেন তারা হয়তো অনেকেই জানেন আবার অনেকেই এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানেন না। এই বিষয়টি বিবেচনা করে প্রশ্ন ও উত্তরগুলো একত্র করে পান্ডুলিপিতে প্রকাশ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম। আশাকরি যারা নতুন তাদের কাজে লাগবে।


##প্রথম প্রশ্ন : পেঙ্গুইন আপডেটের পর এখন একটা সাইটের ফুল  অফ পেজ এসইও করতে হলে কিভাবে এবং ডেইলি কি কি করতে হবে?

উত্তর : পেঙ্গুইন পরবর্তী লিংকবিল্ডিং সম্পর্কে বলার আগে বুঝতে হবে কেন এই আপডেট করলো গুগল। এটার প্রাথমিক কারন হচ্ছে অটোমেটেড ব্ল্যাকহ্যাট ট্রিক্স সম্বলিত স্প্যামি লিংকবিল্ডিং প্রসেসকে এনকাউন্টার করা এবং কোয়ালিটি সম্পন্ন ন্যাচারাল ও ফ্রেস লিংক গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া। আরেকটা কথা নিশ্চই মনে আছে সবার, quality matters more than quantity। সুতরাং লিংক বিল্ডিং প্রসেস কোন মতেই যেন আনন্যাচারাল নয়, গুগলের জন্য লিংক হবে ন্যাচারাললিংক। যাই হোক, পেঙ্গুইন এর যুগে যেই বিষয়গুলো এভোয়েড করবেনঃ
  • লো কোয়ালিটি ব্যাকলিংকস
  • ইরিলেভেন্ট সাইটে লিংকিং
  • সেম ডোমেইন থেকে লিংক নেওয়া পরিহার করা
  • ইরিলেভেন্ট পেজে অতিরিক্ত ইন্টারনাল লিংকিং।
  • ডুফলো এর পাশাপাসি নোফলো লিংকিং ও করতে হবে
  • শুধু হোম পেজকেই নয় ইনার পেজকেও লিংকিং করতে হবে মানে ডিপ লিংকিং
  • ইরিলেভেন্ট সাইটে ফুটার বা সাইডবারে লিংকিং (যেটা সব পেজেই থাকে) অ্যান্ড ব্লগরল লিংকস
  • লিংক ডাইভার্সিফাই করুন (শুধু মাত্র ১টা উৎস থেকে ব্যাকলিংক না করে বিভিন্ন উৎসে লিংকিং করুন)
আরও গুরুত্বপূর্ন দুটি ব্যাপার যা অবশ্যই এভোয়েড করে চলতে হবেঃ

(ক) র‍্যাপিড লিংকবিল্ডিং পরিহার করা (link velocity – দ্রুত লিংকবিল্ডিং করা যাবেনা, আস্তে আস্তে করতে হবে। দিনে সর্বোচ্চ ৪/৫টার বেশি যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে তা না হলে পেনাল্টি খাওয়ার সম্ভভবনা বেশি থাকবে যা হিতে বিপরীত হওয়ার সামিল, বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে যারা এসইও’র কাজ করে তাদের দেখা যায় তারা ১দিনেই ১০০/১৫০ লিংক বিল্ডিং করে, তারা জানেনা এর পরিণাম কি!)

(খ) লিংক বিল্ডিং এর সময় এক্সাক্ট মেচ কিওয়ার্ড ইউজ না করা (মানে হচ্ছে Anchor Texts কে যথা সম্ভব ডাইভার্সিফাই করতে হবে যাতে করে এটা ন্যাচারাল লাগে গুগল যাতে কোন ক্রমেই না বুঝতে পারে এটা আনন্যাচারাল, এক্ষেত্রে শুধু ইউআররেল বা প্রেসাল কিওয়ার্ড অথবা আপনার ব্রান্ডনেম ইউজ করলেই চলবে অথবা আপনি চাইলে শুধুমাত্র আপনার নামই ইউজ করতে পারেন)।

*** গুগল পেঙ্গুইন এর পেনাল্টির হাত থেকে বাঁচতে চাইলে পাশাপাশি এই কাজগুলোকেও এভোয়েড করবেন Content Marketing /Article Marketing with spun articles, Forum Profile Link building, Link Exchanges, low Quality Press Release & social bookmarking Submissions, Mass Directory Submissions (except niche based specific directories)।

গুগল অনেক আগেই ওয়েব সাইট রেংক করানোর ক্ষেত্রে ঘোষণা দিয়েছে “Social Signals” এর ব্যাপারে তাই সোশ্যাল মিডিয়া এখন খুবি গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং অন্যান্য লিংকবিল্ডিং প্রসেস চালু রাখার পাশাপাশি সাইটের কন্টেন্টকে নিয়ম করে গুগল প্লাস, ফেসবুক/লাইক, টুইটার, পীন্টারেস্ট এ শেয়ার করবেন যাতে ২/৩টা করে লাইক শেয়ার হয় দৈনিক। আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সাইটে ভাইরাল কন্টেন্ট লিখার কোন জুড়িই নাই, যা ইউজারই নিজের ইচ্ছায় শেয়ার করে দিবে। এইতো, তবে আমি পার্সোনালি আরেকটা কথা বলতে চাই উপরোক্ত নিয়ম মেনে ইথিকাল ওয়েতে সব ধরনের লিংক বিল্ডিং চালিয়ে যেতে পারবেন আপনি, তাহলেই আসবে সফলতা।


##দ্বিতীয় প্রশ্ন : একটা সাইটের কিওয়ার্ড যদি বায়ার না ঠিক করে দিয়ে থাকে তবে কি ঐ সাইটের প্রতিটি পেজের কিওয়ার্ড রিসার্স করে তারপর এস ই ও করতে হবে? নাকি জাস্ট হোম পেজ এর কিওয়ার্ড গুলো থেকে বাছাই করে কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করলেই হবে?

উত্তর : কিওয়ার্ড রিসার্স ছাড়া একটা সাইটের পরিপূর্ন এসইও প্লান করা যায় না। কিওয়ার্ড রিসার্স করার হয় সাইটের জন্য উপযুক্ত টার্গেটেড কিওয়ার্ড খুঁজে পেতে পাশাপাশি এ টু জেড এসইও স্ট্রেটেজি ঠিক করতে। টার্গেটেড কিওয়ার্ড ছাড়া ওয়েবসাইট পালবিহীন নৌকার মত। আর আপনার গোল/উদ্দ্যেশ্য (প্রডাক্ট বিক্রি করবেন নাকি সার্ভিস দিবেন নাকি অন্য কিছু) কি সেটার উপর ভিত্তি করেই কিওয়ার্ড রিসার্স করা হয়। এখন কথা হচ্ছে বায়ার যদি কিওয়ার্ড ছাড়াই আপনাকে সাইট দিয়ে বলে এসইও করতে/বায়ারের যদি টার্গেটেড কিওয়ার্ড না থাকে, তখন আপনার প্রথম কাজ হচ্ছে ওর গোলটা জেনে বা ভালো মত বুঝে নিয়ে – ওর নির্দিষ্ট পেজ অনুযায়ী কিওয়ার্ড রিসার্স করে দেওয়া (এখানেও আপনার অনেক ডাটার প্রয়োজন পরবে, যেমন তার এই সাইট থেকে ফিডব্যাক পাওয়ার চাহিদা কেমন! আরও অনেক কিছু) যাতে ঐ সাইটের জন্য উপযুক্ত বা পারফেক্ট কিওয়ার্ড পাওয়া যায়। এরপর আপনার টার্গেটেড কিওয়ার্ড নিয়েই প্লান করতে হবে অনপেজ এবং অফপেজ এসইও স্ট্রেটেজি।

##তৃতীয় প্রশ্ন : মিনিমাম কত দিন লাগতে পারে একটা ট্রাভেল সাইট রেংক করাতে?

উত্তর : একটা সাইটকে রেংক করতে হলে মুখস্ত বলা যায় না যে এটা কত সময় লাগবে রেংক করতে। আসলে এটার জন্য অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে, তাও এক্সাক্ট বলা যায় না জাস্ট গেস করতে হয়। এটা হচ্ছে একটা প্রতিযোগিতার মত। ওয়েট উদাহরণ দিচ্ছি… আপনি যদি কিছু সংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করেছে এমন রেসে জিততে চান তাহলে বলুন কি করতে হবে আপনাকে? ক) আপনাকে আগে বুঝতে হবে কতজন এই রেসে অংশ গ্রহণ করেছে জুস্ট বুঝার জন্য এক্সাক্ট কতজন আপনার প্রতিদ্বন্দি এবং পাশাপাশি কারা তারা? খ) তারা কে কেমন শক্তিশালী, কেমন গতিতে দৌড়াচ্ছে, এবং এত গতিতে দৌড়ানোর জন্য কি কি করছে? গ) অবশেষে ওদের গতিবিধি বুঝে নিয়ে আপনার কর্মপদ্ধতি ঠিক করা এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে যাওয়া। তাহলেই সম্ভব রেসে জেতা। ডেটস ইট… ত কি বুঝলেন এই উদারহণ থেকে? আশা করি আর ভেঙে বলতে হবে না, বুঝে নিতে পারবেন…

##চতুর্থ প্রশ্ন : আমাকে পার্টিকুলার কোন দেশের ভিজিটর আনতে হলে কি লিখে সার্চ দিলে জাস্ট ঐ দেশ রিলেটেড সাইট, ব্লগ বা ফোরাম আসবে?

উত্তর : এই প্রশ্নটা যদিও আমার কাছে ক্লিয়ার না। কারন আপনার প্রশ্নের প্রথম অংশে বুঝা গেলো যে আপনি কোণ নির্দিষ্ট দেশ থেকে আপনার সাইটের ট্রাফিক আনতে চান, আবার শেষের অংশে বুঝা যাচ্ছে আপনি লিংক বিল্ডিং করার জন্য নির্দিষ্ট দেশের সাইট খুঁজার স্টাইল জানতে চাচ্ছেন। এখন কি উত্তর দিবো, আমি কনফিউসড। তারপরও উত্তর দিচ্ছি… যদি আপনার প্রথম অংশটা প্রশ্ন হয় তবে, এক্ষেত্রে আপনি প্রথম যে কাজটা করতে পারেন তা হচ্ছে জিওগ্রাফিক কিওয়ার্ড (যেমন Atlanta divorce lawyer) টার্গেট করতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী অনপেজ অপটিমাইজেশন করতে পারেন, তারপর কান্ট্রিওয়াইজ (যেমন বাংলাদেশের জন্য .bd এক্সটেনশন) সাইট খুঁজে বের করে যেসব যেসব ওয়ে আছে ওগুলো ইউজ করে লিংকবিল্ডিং করুন, আরেকটা কথা লিংকবিল্ডিং এরক্ষেত্রে ভালো সুফল পেতে দেশভিত্তিক ডোমেইন আইপি এবং হোস্টিং সার্ভার এর কথা মাথায় রাখা জরুরী। যদি আপনার দ্বিতীয় অংশটা প্রশ্ন হয় তবে, উত্তর হচ্ছে কিওয়ার্ড সংযোজন করে ডোমেইন এক্সটেনশন শেষে দিয়ে সার্চ করুন তাহলেই পেয়ে যাবেন।


দ্রৌপদী বললেন, ‘আমার তেষ্টা পেয়েছে, জল খাব।’ এই পাহাড় ঘেরা জায়গায় সুপেয় জল কোথায়?  পঞ্চপাণ্ডবের চারজন যখন মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন, ভীমসেন হাতের গদা তুলে সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করলেন ভূমিতে। পৃথিবী বিদীর্ণ হল,  ভূগর্ভের জল উপরে উঠে সৃষ্টি হল এক হ্রদ। কৃষ্ণার তৃষ্ণা মেটাতে ভীমের তৈরি— ‘ভীমতাল’।
মে-রাত্তিরে ভীমতালের টুরিস্ট বাংলো থেকে এক আকাশ তারার নীচে জ্বলজ্বলে টলটলে ভীমতালকে দেখে এই গল্পকেও বিশ্বাস করতে ইচ্ছে জাগে। একা ভীমতালের আর দোষ কী! উত্তরাখণ্ডের আকাশ-বাতাস, পাহাড়-নদীর গায়ে এমন মায়াচুম্বক, ইতিহাস আর মিথ দুই-ই সমান টানে। ভীমতালে এসে উঠেছি, তা বলে কি দুপুরের মিঠে রোদে নৈনিতালের সোনা সোনা আকাশ দেখে মনে মনে বলিনি,  কেন এই মুহূর্তগুলো চলে যাবে, কেন এদের ধরে রাখতে পারবনা জীবনে? কেন?
পাহাড়ি পথে আলমোড়া। ‘এই মাটিতে রইল তাহার বিস্মিত প্রণাম,’ আলমোড়ায় লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। বিবেকানন্দ, নিবেদিতার আলমোড়া। পাহাড়ের গায়ে পা-পা নেমে যাওয়া রামকৃষ্ণ মিশন।পাহাড়ি সারল্য আর সাহেবি আভিজাত্য হাত ধরাধরি করে হাঁটে এই শৈলশহরে। ভিউপয়েন্টের নাম ‘ব্রাইট এন্ড কর্নার’ কেন, মর্মোদ্ধার হয় এখান থেকে নন্দাদেবী, পঞ্চচুল্লি, নন্দকোট, চৌখাম্বা দেখতে পেলে। দেখেছি কৌশানী থেকেও, তাতে কী! একই জিনিস নবনব রূপে দেখায় উত্তরাখণ্ডের নিসর্গ।সম্মোহনের কাজল পরিয়ে নেয় দু’চোখে।

 বৈদ্যনাথ মন্দির

তা-ই যদি বা না হবে, তবে রানিখেতের মতো ক্যান্টনমেন্ট টাউনের রাস্তায় কুমায়ুন আর নাগা রেজিমেন্টের সেনাদেরও এমন অ-সেনাসুলভ,  রোম্যান্টিক গোছের লাগে কেন? পাথুরে মুখ চোখেও ছায়া ফেলে যায় উত্তরাখণ্ডের বর্ষার মেঘ। বর্ষা দেখেছি মেঘালয়েও,  কিন্তু উত্তরাখণ্ডে এসে বোঝা গেল, এ-ও কম আপন ঘর নয় মেঘেদের। মুসৌরির রিমঝিম রাত ভোর হতে পারে শ্রাবণী মেঘের কনসার্ট শুনে,  জুলাইয়ের ক্যানভাসে কৃষ্ণকলি মেঘেদের আঁকিবুকি দেখেই কেটে যেতে পারে ধনৌলটির কোনও বিবশ বিকেল। বিশ্বাস না হলে মুসৌরি-লাগোয়া ল্যান্ডর-এর বাসিন্দারা স্কিনবন্ডকে জিজ্ঞেস করে দেখুন! ওঁর বইয়ের প্রতিটি পাতাই উত্তরাখণ্ডের প্রাকৃতিক পাণ্ডুলিপি।
ভ্রামণিকেরও রকম ফের আছে। কেউ স্রেফ রোজকার রুটিন থেকে পালিয়ে দু’দণ্ড জিরোতে বেরিয়ে পড়েন। কাউকে টানে ট্রেকিং-পথ আর তুষারশৃঙ্গ, না এসে পারেননা। কারও আকর্ষণ এখানকার মন্দির আর তীর্থক্ষেত্র। যে যা-ই চান, উত্তরাখণ্ড কল্পতরু। ফি বছর হরিদ্বার- হৃষীকেশ- দেহরাদূন- কেদারনাথ- বদ্রিনাথসহ চারধাম যাত্রায় যান লক্ষ লক্ষ মানুষ। পাহাড়-প্রেমিক সময় পেলেই বেরিয়ে পড়েন নৈনিতাল-রানিখেত- আলমোড়া- চৌখরি- কৌশানী ঘুরতে। রূপকুণ্ড, সতোপন্থ, নাগটিব্বা, গোমুখতপোবন, হরকিদুন, চোপতা-সহ রাশিরাশি ট্রেকিং-গন্তব্যের ডালা নিয়ে বসে আছে এই রাজ্য। এমন মানুষকেও চিনি, যিনি প্রতি বছর সপরিবার উত্তরাখণ্ড আসেন; তাঁর মা-বাবা হরিদ্বার-হৃষীকেশ পেয়ে খুশি, ছোটরা পাহাড় নদী পাইন বন পেয়ে, আর তিনি নিজে ট্রেকিংয়ে!
বেড়াতে গিয়ে রাত্রিবাসের স্থান হিসেবে অনেকেই বেছে নিই একটু সর গরম জায়গাগুলোকে, কারণ মনের পুকুরে নিরাপত্তা, জরুরি পরিষেবার মতো ব্যাপারগুলো ঘা মারতে থাকে। অনেক চোখ-জুড়োনো জায়গাই তাই দিনে দিনে দেখে বেরিয়ে যাই। খেয়াল করে দেখবেন, সেই জায়গাগুলো দেখেই বেশি আক্ষেপ হয়, কেন থাকলাম না এখানে একটা রাত! বিনসারের অরণ্য পথে হাঁটতে হাঁটতে এই হা-হুতাশ পেয়ে বসেছিল আমাকেও। বনের মধ্যে হঠাৎ দেখা বিন্ধ্যেশ্বর মহাদেবের মন্দির, একটা বাঁকে গাড়ি থামিয়ে শুধু চারপাশের জঙ্গুলে গন্ধ আর পাখি-পতঙ্গের ডাক সমগ্র অস্তিত্বে মিশিয়ে নেওয়া— উত্তরাখণ্ড পাল্টে দেবে আপনাকে। গোমতীর তীরে ভারত সরকারের ‘মনুমেন্টস অব ন্যাশনাল ইম্পর্ট্যান্স’ তালিকাভুক্ত, নবম-দ্বাদশ শতকের বৈজনাথ বা বৈদ্যনাথ মন্দির দেখে স্তব্ধ হতে হয়, ইতিহাসও আধ্যাত্মিকতাকে মন সমান্তরাল আর অঙ্গাঙ্গি চলেছে এই ভারতবর্ষে! কৌশানীর ‘গাঁধী অনাসক্তি আশ্রম’ দেখে মনে হয়, কেন এমন সহজভাবে গোছাতে পারিনা জীবনটাকে, কেন শুধু বাহুল্য দিয়েই সাজাই!

 উত্তরখান্ড থেকে সুদূর হিমালয়

হিমালয় নিয়ে বলা হল না কিছুই। বা, হিমালয় নিয়ে যতই বলি, শেষ কি হয়? উত্তরাখণ্ড জুড়ে আছে কুমায়ুন আর গঢ়বাল হিমালয়ের উদার বিস্তৃতবক্ষপট; অলকানন্দা ভাগীরথী মন্দাকিনী গঙ্গা গোমতী পিন্ডার যমুনায় ভেজা পাথর-মাটি। একদিন সেই সক্কালবেলায় গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে, গোটা কুমায়ুন পেরিয়ে হাজির হয়েছিলাম ল্যান্সডাউনে। গঢ়বালের ছোট্ট সেই জনপদে তখন সন্ধে নামছে।পথে একটু বাদে বাদে আর্মি চেকপোস্ট, পাশ দিয়ে গাড়ি যাওয়ার সময় দেখি স্যালুট ঠুকছেন জওয়ানরা। টুরিস্ট বাংলোয় পৌঁছে আরও অবাক।সাহেবি আমলের বিশাল সুগম্ভীর বাংলো দাঁড়িয়ে আছে। এমন আভিজাত্যকেই বুঝি ইংরেজিতে ‘ম্যাজেস্টি’ বলে!
আধ্যাত্মিকতা থেকে অ্যাডভেঞ্চার, উত্তরাখণ্ডে পুরোটাই প্রাপ্তিযোগ। শৈবতীর্থ আর শক্তিপীঠগুলো দেখতে পারেন বছরভর।দুয়ারে বর্ষা বলে ভ্রমণে ভরসা হারাবেন না। মুসৌরি, ধনৌলটি, কৌশানী, মুন্সিয়ারি, ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্সের মতো জায়গা ঘুরতে পারেন বৃষ্টি- ঋতুতেও।

সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল প্রতিবছরই ৫০০-৬০০ বার পান্ডা, পেঙ্গুনইসহ অ্যালগরিদমে নতুন সংষ্করণ বা পরিবর্তন আনে। বিষয়টি অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কারণটি হলো এই সকল আপডেটের বেশিরভাগই গৌণ বা ছোট ধরনের পরিবর্তন। মূল বিষয়টি হলো, প্রতি বছর গুগল অ্যালগরিদমে ৩/৪টি বড় ধরনের আপডেট আসে। এগুলো সার্চ রেজাল্টে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।
অনলাইন মার্কেটার, ওয়েবমাস্টারদের গুগলের এই সকল অ্যালগরিদমের বিভিন্ন আপডেট কবে হয়েছে, কি ধরনের পরিবর্তন এসেছে এসব জানা জরুরী। যার ফলে সাইটের র‌্যাংকিং ও অর্গানিক ওয়েবসাইট ট্রাফিক বৃদ্ধির জন্য যা করা দরকার সেটি সম্পর্কে ধারনা পাবেন। তাই আর্নট্রিক্সের পাঠকদের জন্য গুগলের অ্যালগরিদমের বড় ধরনের পরিবর্তণ ও এ সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত তথ্য তুলে ধরা হলো।

ইতিহাসঃ

সেপ্টেম্বর ১৯৯৮ : সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগলের যাত্রা
ল্যারি পেইজ ও সের্গেই ব্রিন একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে গুগল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৪ সালের ১৯শে আগস্ট এটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়। মূলত সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগলের যাত্রা শুরু হয়, যেটি লিংক ম্যাট্রিক্স ব্যবহারের মাধ্যমে কোনো সাইটের র‌্যাংক নির্ধারণ করে।
ডিসেম্বর ২০০০ : গুগল টুলবার
গুগল তাদের ব্রাউজার টুলবার ‘টুলবার পেজ র‌্যাংক (টিবিপিআর)’ চালু করে। মূলত তখন থেকেই সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বিতর্ক শুরু হয়।

সেপ্টেম্বর ২০০২ : প্রথম ডকুমেন্টেড আপডেট
গুগল সর্বপ্রথম তাদের ডকুমেন্টেড আপডেট আনে। যেটির প্রভাব বেশি না হলেও পেজর‌্যাংক পরিবর্তনে অনেক ভ’মিকা রাখে।
ফেব্রুয়ারি ২০০৩ : দ্য বস্টন আপডেট
অ্যালগরিদম আপডেট হিসেবে গুগলের প্রথম আপডেট ‘এসইএস বস্টন’ ঘোষনা করা হয়। অ্যালগরিদম কম্বিনেশন ও প্রতি মাসে ইন্ডেক্স রিফ্রেশ (গুগল ড্যান্স) সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি বিষয় ছিলো এই সংষ্করণে।
এপ্রিল ২০০৩ : দ্য কাসান্ড্রা আপডেট
কিছু বেসিক লিংক কোয়ালিটি, হিডেন লিংক ও হিডেন টেক্সট ব্যবহার করে দ্য কাসান্ড্রা আপডেট আনে গুগল।
মে ২০০৩ : দ্য ডমিনিক আপডেট
ব্যাক লিংক রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ও সেটি কাউন্ট করার মাধ্যমে অ্যালগরিদমে বিশেষ পরিবর্তণ আনা হয়। এই সময়ে ডিপক্রাউলার ও ফ্রেশবট আপডেটের ফলে অনেক ওয়েবমাস্টার দাবি করেন, তাদের সাইটের র‌্যাংকিং অনেক পরিবর্তণ আসছে।
জুন ২০০৩ : দ্য এসমারেলডা আপডেট
এটিই ছিলো গুগল অ্যালগরিদমের নিয়মিত মাসিক আপডেটের সর্বশেষ সংষ্করণ। গুগল ড্যান্সের পরিবর্তে ইভারফ্লাক্স আনা হয়, যেটি গুগলের পরবর্তী আপডেট সম্পর্কে সতর্কবার্তা দেয়।
জুলাই ২০০৩ : দ্য ফ্রিটজ আপডেট
প্রতি মাসের পরিবর্তে প্রতিদিন গুগল ইনডেক্স আপডেট নির্ধারণ করা হয়। এটি মূলত গুগল ড্যান্স বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেই কার্যক্রম শুরু করে।
সেপ্টেম্বর ২০০৩ : দ্য সাপ্লিমেন্টাল ইনডেক্স
পারফরমেন্স লেভেলের কোনো পরিবর্তন ছাড়াই এই আপডেটের মাধ্যমে গুগল আরো বেশি ডকুমেন্ট ইনডেক্স করার সুবিধা আনা হয়।
নভেম্বর ২০০৩ : দ্য ফ্লোরিডা আপডেট
মূলত এই আপডেটের ফলে এসইও বিষয়টি অনেকটা চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে দাড়ায়। এই আপডেটে অনেক জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের র‌্যাংকিং কমে যায়।
জানুয়ারি ২০০৪ : দ্য অস্টিন আপডেট
এটি মূলত আগের ফ্লোরিডা আপডেটের বর্ধিত সংষ্করণ। এখানে কিওয়ার্ড স্ট্যাফিং ও ইনভিজিবল টেক্সট ইনডেক্সের মাধ্যমে মোটকথা অন-পেজ অপটিমাইজেশনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। যে বিষয়গুলো এখনও গুরুত্বপূর্ণ।
ফেব্রুয়ারি ২০০৪ : দ্য ব্র্যান্ডি আপডেট
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও অনেক পরিবর্তণ আনা হয়। দ্য লেটেন্ট সিমেনটিক ইনডেক্সিংয়ের মাধ্যমে এই আপডেটে কোনো ওয়ার্ডের সিসোনিম বা সমার্থক শব্দ খুঁজে বের করা ও কিওয়ার্ড অ্যানালাইসিস ফিচারে আমূল পরিবর্তণ আসে।
জানুয়ারি ২০০৫ : দ্য নোফলো
গুগল মাইক্রোসফট ও ইয়াহুর সঙ্গে মিলে ‘নোফলো’ লিংক বিষয়ক আপডেট আনে। এটার মূল উদ্দেশ্য ছিলো স্প্যাম লিংক খুঁজে বের করা। তবে এটি লিংকিং এর ক্ষেত্রে অনেক বড় প্রভাব ফেলে।

ফেব্রুয়ারি ২০০৫ : দ্য অ্যালেগ্রা আপডেট
এই আপডেটে সাইটের র‌্যাংকিংয়ে পরিবর্তণ আসলেও অ্যালগরিদম পরিবর্তনের সব বিষয় অনেকটা অস্পষ্ট। ধারণা করা হয়, গুগল কিছু সন্দেহজনক লিংক ধরার জন্য অ্যালেগ্রা আপডেট আনে।
মে ২০০৫ : দ্য বরবন আপডেট
সার্চ কোয়ালিটিতে পরিবর্তনের এই আপডেটের মূল বিষয়টি আগের আপডেটের মতো অস্পষ্ট থাকলেও বেশিরভাগ ওয়েবমাস্টাররা মনে করেন, এই আপডেটে নন-ক্যানোনিকাল ও ডুপ্লিকেট কনটেন্ট একটা সাইটের জন্য কতটা ক্ষতিকর হতে পারে সেটি প্রকাশ পেয়েছে।
জুন ২০০৫ : পার্সোনালাইজড সার্চ
মূলত এই আপডেট থেকেই গুগল তাদের ব্যবহারকারীর সার্চ হিস্টোরিকে কাজে লাগাতে শুরু করে। পূর্ববর্তী সার্চ হিস্টোরিকে মনে রেখে এটি পরবর্তী সার্চের সময় রিলেটের কনটেন্ট দেখানো শুরু করে। এতে সার্চিং সময়টা আরো সহজ ও দ্রুত হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনে গুগল পার্সোনালাইজড সার্চ ফিচারটি ব্যবহার শুরু করে।
জুন ২০০৫ : দ্য এক্সএমএল সাইটম্যাপ
সচরাচর ব্যবহৃত এইচটিএমএল সাইটম্যাপকে এক্সএমএল সাইটম্যাপে পরিবর্তণ করা হয়। সাইটের ইনডেক্সিং ও ক্রাউলিংয়ের জন্য ওয়েবমাস্টাররা গুগল ওয়েবমাস্টার টুলে তাদের সাইটের এক্সএমএল সাইটম্যাপ সাবমিট করার সুযোগ পান।


সেপ্টেম্বর ২০০৫ : দ্য গিল্লিগান আপডেট
গুগলের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই আপডেটে তেমন কোনো পরিবর্তণ আনা হয়নি। ইনডেক্স ডাটা প্রতিদিনই আপডেট হবে তবে টুলবার পিআর এর মতো কিছু মেটিক্স প্রতি ৩ মাস অন্তর অন্তর আপডেট হবে।
অক্টোবর ২০০৫ : দ্য গুগল লোকাল/ম্যাপস আপডেট
বেশ কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে লোকাল এসইও এর ক্ষেত্রে এই আপডেট বিশেষ ভ’মিকা রাখে। ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন তথ্য শেয়ারের জন্য গুগল ম্যাপ চালু করা হয়।
অক্টোবর ২০০৫ : দ্য জ্যাগার আপডেট
এই আপডেটটি সেপ্টেম্বরে শুরু হয় এবং অক্টোবর পর্যন্ত উন্নয়নের কাজ চলে। এই আপডেটের প্রধান বিষয়গুলো ছিলো লিংক ফার্মস, পেইড লিংক, লো কোয়ালিটি লিংক ও রেসিপ্রোক্যাল লিংক।
ডিসেম্বর ২০০৫ : দ্য বিগ ড্যাডি আপডেট
এটি মূলত গুগলের অভ্যান্তরীণ কার্যক্রমের আপডেট। গুগল কিভাবে ৩০১/৩০২ রিডাউরেক্ট করে, টেকনিক্যাল ইস্যু বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
নভেম্বর ২০০৬ : দ্য সাপ্লিমেন্টাল আপডেট
কোনো পেজকে ফিল্টারিংয়ের ক্ষেত্রে এই আপডেটকে ব্যবহার করা হয়। যার ফলে পেনাল্টির মতো বিষয় ঘটেছে। তবে গুগলের পক্ষ থেকে বলা এমনটি হয়নি বলে বলা হয়।
ডিসেম্বর ২০০৬ : দ্য ফলর্স অ্যালার্ম
রিপোর্ট স্বত্বেও কোনো সাইটের র‌্যাংকিংয়ে ভালোমানের পরিবর্তণ আনে এই আপডেট। এটি মূলত মিথ্যা রিপোর্ট ধরার কাজে ব্যবহৃত হয়। তবে গুগলের পক্ষ থেকে বলা হয় এই আপডেটে বেশি কিছু পরিবর্তণ আনা হয়নি।


মে ২০০৭ : দ্য ইউনিভার্সাল সার্চ আপডেট
সাধারণ অ্যালগরিদমের ক্ষেত্রে কোনো আপডেট না আসলেও এই আপডেটে গুগল তাদের সার্চে নিউজ, ছবি, ভিডিওসহ বেশ কিছু প্রয়োজনীয় সেবাকে যুক্ত করে। যেটি সাচিং কৌশলকে আরো সহজ করেছে।
জুন ২০০৭ : দ্য বাফি আপডেট
এটি মূলত কয়েকটি ছোট ছোট পরিবর্তনের একটি সম্মিলিত আপডেট।
আগষ্ট ২০০৮ : দ্য গুগল সাজেস্ট আপডেট
এটি মূলত সার্চ করার সময় ড্রপডাউনের মাধ্যমে গুগল যে কিওয়ার্ডগুলো সাজেশন সে বিষয়টি। এতে সাচিং কৌশলটা আরো সহজ, নির্ভুল ও কম সময়ে সম্পন্ন করার সুযোগ পেয়েছেন ব্যবহারকারীরা।
এপ্রিল ২০০৮ : দ্য ডিউয়ি আপডেট
এখানে মূলত গুগলের নিজস্ব পণ্য বা সেবা বাড়ানোর বিষয়টি এসেছে। অ্যালগরিদমের বিশেষ কোনো পরিবর্তন না।
ফেব্রুয়ারি ২০০৯ : দ্য ভিঞ্চ আপডেট
এই আপডেটে মূলত বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ড, প্রতিষ্ঠানের র‌্যাংকিংকে নজর দেওয়া হয়।
ফেব্রুয়ারি ২০০৯ : দ্য রি-ক্যানোনিক্যাল ট্যাগ আপডেট
গুগল, মাইক্রোসফট ও ইয়াহু জানায় যে তারা ক্যানোলিক্যাল ট্যাগকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এর ফলে ওয়েবমাস্টাররা সার্চ বোটকে সহায়তা করার সুযোগ পান এবং সার্চ ইঞ্জিনে প্রভাব ফেলতে পারেন।
আগস্ট ২০০৯ : দ্য কাফেয়িং আপডেট প্রিভিউ
এই আপডেটে ক্রাউলিং স্পিড বাড়ানো, ইনডেক্স পদ্ধতি বর্ধিতকরণ, রিয়েলটাইম ইনডেক্সিং ও র‌্যাংকিং বিষয়গুলোতে পরিবর্তণ আনা হয়। তবে এটি ছিলো প্রিভিউ সংষ্করণ।


ডিসেম্বর ২০০৯ : দ্য রিয়েল টাইম সার্চ আপডেট
এই আপডেটে রিয়েল টাইম সার্চের ক্ষেত্রে গুগল নিউজ, টুইটার ফিড, ইনডেক্সেড কন্টেন্ট ও বিভিন্ন সোর্স থেকে দ্রুত সার্চ রেজাল্ট দেখানোর সুবিধা নিয়ে আসে।

কাঁঠালের পরিচিতি

কাঁঠাল আমাদের বাঙালির প্রিয় ফলের মধ্যে একটি ফল। গ্রীষ্মের চরম দাবদাহে এই রসালো ফলে জিুড়ায় আমাদের প্রাণ এবং মেটে পানির অভাব। তবে দেখা যায় যে, অনেকেই এই ফলের বিষযে নাক সিঁটকান।নানান পুষ্টিগুণে পুরোপুরি ভরপুর কাঁঠাল। সাধারণত আলুর চিপস আমাদের সকলেরই কমবেশি পরিচিত। আমাদের হয়ত অনেকেরই জানা নাই যে, খাজা কাঁঠালের কোয়াকে শুকনো করে তেলে ভেজে যে চিপস তৈরি হয়, সেটা কিন্তু পটেটো চিপসের থেকেও অনেক সুস্বাদু হয়। আবার কাঁঠালের রস খেলে শরীরে প্রচুর শক্তি সঞ্চারন হয়ে।
কাঁঠালকে বাংলাদেশের জাতীয় ফল ঘোষণা করা হয়েছে, এর ইংরেজী নাম হচ্ছে (Jackfruit)। বাংলাদেশের কম-বেশি সব স্থানেই কাঁঠাল পাওয়া যায়। সাধারণত আমাদের দেশে বসন্ত ও গ্রীস্মের প্রথমে কাঁচা অবস্থায় এবং গ্রীস্ম ও বর্ষায় পাকা অবস্থায় কাঁঠাল পাওয়া যায়। এ ফলটি আকারে বেশ বড়-সড় হয়ে থাকে।কাঁঠাল পুষ্টিগুনে ভরপুর একটা ফল।

কাঁঠালের চাষ

সুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতের প্রায় অধিকাংশ স্থানেই কাঁঠাল পর্যাপ্ত আকারে পাওয়া যায়। তবে কাঁঠাল সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ফিলিপাইনে। ব্রাজিলের উপকূলবর্তী এলাকায় কাঁঠাল চাষ হয়ে থাকে। ওখানে কাঁঠালের রস আলাদাভাবে প্যাকেট বা কৌটোবন্দি করে বাজারে বিক্রি করা হয়।

কাঁঠালের পুষ্টিগুণ

রসালো ফল কাঁঠালে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, বি-১, বি-২, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ নানা রকমের পুষ্টি ও খনিজ উপাদান পাওয়া যায়। এই সকল পুষ্টিকর উপাদান আমাদের শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এর পাশাপাশি কাঁঠাল আমাদের ভিটামিনের চাহিদাও পূরণ করে। সাধারণত কাঁঠালের বিচিতে ৬.৬ গ্রাম আমিষ আছে ও ২৫.৮গ্রাম শর্করা আছে। আমাদের সবার জন্যই আমিষসমদ্ধ কাঁঠালের বিচি বেশ উপকারী।
এজন্য আমাদের সবাইকে কাঁঠাল গাছ বেশি লাগানো উচিত। সেই সঙ্গে কাঁঠাল ফলটি খেয়ে ভিটামিন ‘এ’- এর ঘাটতি অনেকাংশে পূরণ করা সম্ভব।স্বাভাবিক আকারের কাঁঠালের ৪-৫ কোয়া থেকে ১০০ কিলো ক্যালরি পর্যন্ত খাদ্য শক্তি পাওয়া যায়। কাঁঠালের হলুদ রঙের কোষ হচ্ছে ভিটামিন ‘এ’ সমদ্ধ। ২-৩ কোয়া কাঁঠাল আমাদের এক দিনের ভিটামিন ‘এ’ এর চাহিদা পূরণ করে।

কাঁঠালের উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ

১) শক্তির উৎস কাঁঠাল: কাঁঠালে পর্যাপ্ত পরিমাণে শর্করা, ক্যালোরি, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ রয়েছে, যা আমাদের শরীরে দ্রুত শক্তি বাড়ায়। একই সঙ্গে কাঁঠালে কোন কোলেস্টেরোল জাতীয় উপাদান নেই যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। সে কারণে এ ফলটিকে বেশ স্বাস্থ্যকর ফলের তালিকায় আমরা স্থান দিয়ে থাকি।

২) কাঁঠাল রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে: আমাদের সর্দি-কাশি, জ্বরের মতো সাধারণ নানা রোগকে প্রতিহত করে এই রসালো কাঁঠাল। সাধারণত ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের দারুণ উৎস কাঁঠাল।

৩) রক্তস্বল্পতা রোধে কাঁঠালঃ কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, ই, কে, নিয়াচিন, ফলেট, এবং ভিটামিন বি-৬। এছাড়াও আছে বিভিন্ন ধরণের মিনারেল সমৃদ্ধ উপাদান যেমনঃ কপার, ম্যাংগানিজ, ম্যাগনেসিয়াম যা রক্ত তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই এটি রক্তস্বল্পতা রোধে দারুণ কাজ করে থাকে। তাই যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তাদের জন্যে এই রসালো ফল কাঁঠাল উপকারি হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।



৪) গর্ভবতী মায়ের খাবারঃ চিকিৎসা শাস্ত্র মতে, প্রতিদিন ২০০ গ্রাম তাজা পাকা কাঁঠাল খেলে গর্ভবতী মহিলা ও তার গর্ভধারণকৃত শিশুর প্রায় সব ধরনের পুষ্টির অভাব দূর হয়। গর্ভবতী মহিলারা নিয়মিত প্রতিদিন নিদিষ্ট পরিমাণে কাঁঠাল খেলে তার স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকে এবং গর্ভস্থসন্তানের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়। দুগ্ধদানকারী মা যদি তাজা পাকা কাঁঠাল খায় তাহলে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

৫) দুরারোগ্য ব্যাধি প্রতিরোধেঃ কাঁঠালে বিদ্যমান প্রচুর পরিমাণে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস- যা কিনা আমাদের শরীরে আলসার, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সক্ষম। কাঁঠালে আছে প্রয়োজনীয় পরিমাণে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ফ্রির‌্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও আমাদেরকে সর্দি-কাশি রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

৬) চোখ ভাল রাখেঃ কাঁঠালে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন-এ, যা আমাদের চোখের জন্য অপরিহার্য একটি পুষ্টি উপাদান। আপনারা হয়ত অনেকেই জানেন না যে, কাঁঠাল খাওয়ার অভ্যাসে দৃষ্টিশক্তি ভালো হয় এবং এটি আমাদের ত্বকের বলিরেখা বা ভাঁজ প্রতিহত করতে সক্ষম। যেহেতু, রসালো ফল কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে, তাই এটি চোখের রেটিনা বা অক্ষিপটের ক্ষতি প্রতিহত করে থাকে।

৭) হাড় মজবুত ও শক্ত করেঃ আমরা জানি কাঁঠালে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে।এই ক্যালসিয়ামের আধিক্যের জন্যে এটি হাড়ের গঠন সুদৃঢ় ও মজবুত করে। এটি অস্টেওপরোসিস (osteoporosis) নামে হাড়ের ক্ষতিকর রোগ প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনি যে কেউ হাড় মজবুত করার জন্যে খাবারের তালিকায় নিতে পারেন জাতীয় ফলের সাহায্য।

৮) খনিজ উপাদানঃ রসালো ফল কাঁঠালে আছে বিপুল পরিমাণে খনিজ উপাদান ম্যাঙ্গানিজ, যা রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আপনারা চাইলে ছয় মাস বয়সের পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে কাঁঠালের রস খাওয়ালে শিশুর ক্ষুধা নিবারণ হয়। অন্যদিকে তার প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়ে থাকে।

৯) আপনার স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে: পাকা কাঁঠালে রয়েছে পর্যাপ্ত পটাসিয়াম, যা আমাদের শরীরে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে যার ফলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে পায়।

১০) হজমশক্তি বাড়াতে কাঁঠাল: আমরা আমাদের হজমশক্তির জন্য কত কিছুই না খেয়ে থাকি। এই হজমের জন্য উপাদেয় একটা ফল কাঁঠাল এবং এটি আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিহত করে। কারণ, এতে রয়েছে প্রয়োজনীয় পরিমাণে হজমে সহায়ক আঁশ।

১১) পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎসঃ কাঁঠাল হচ্ছে পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট একটি উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালে পটাশিয়ামের পরিমাণ ৩০৩ মিলিগ্রাম। যারা পটাশিয়াম আমাদের শরীরে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এ জন্যে কাঁঠালে উচ্চ রক্ত চাপের উপশম হয়ে থাকে।

১২) মলাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধে ও চিকিৎসায়: সাধারনত কাঁঠালে যে ডায়েটারি ফ্যাট উপাদানটি রয়েছে, তা আমাদের শরীরের মলাশয় থেকে বিষাক্ত উপাদানসমূহ পরিষ্কার করে। এতে করে মলাশয়ের ওপর বিষাক্ত উপাদানসমূহের ক্ষতিকর প্রভাব আমাদের শরীরে পড়তে দেয় না এমনকি মলাশয়ের ক্যান্সার প্রতিহত করে।

কাঁঠালের ঔষধি গুনাগুন

সাধারণত কাঁঠাল গাছের শেকড় হাঁপানী উপশম করতে অনেকাংশে সক্ষম। শেকড় সেদ্ধ করলে যে উৎকৃষ্ট পুষ্টি উপাদান নিষ্কাশিত হয়, তা হাঁপানীর প্রকোম নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। সুধু তাই নয়, টেনশন এবং নার্ভাসনেস কমাতে কাঁঠাল বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

সবশেষে

আয়ুর্বেদিকের ভাষায় কাঁঠালকে সাধারণত রসায়ণ বলে। সাধারণত কাঁঠাল কাঁচা অবস্থায় থাকলে এঁচড় বলে। কাঁঠালের তরকারি বাঙালির অন্যতম প্রিয় একটা খাবার। কাঁঠালের এঁচড়ে প্রচুর শর্করা থাকে। রান্না করলে এর স্বাদ অনেকটা আলুর মতো মনে হয়ে থাকে। আবার শুকনো হয়ে গেলে অনেকটা সেঁকা রুটির মতোন লেগে থাকে। তাই একে গ্রামের দিকে অনেকটা রুটিফলও বলে থাকে। তবে সতর্কতা হল এই যে, যাঁদের হজম ক্ষমতা কম, তাঁদের এঁচড় না খাওয়াই ভাল। সুধু খেতে কাঁঠাল ফলই নয়, পাতা, বীজ, কাঠ সব কিছুই কাজে লেগে যায়।

 চট করে বেরিয়ে আসুন পুরী থেকে।

নদী, পাহাড়, জঙ্গল, সমুদ্র, ম্যানগ্রোভ আর ধর্মীয় তীর্থক্ষেত্রের মহামিলনের অপরূপ মিশেলের আর এক নাম ওড়িশা। বেশ কয়েকটি সার্কিটকে কেন্দ্র করে ঘুরে নেওয়া যায় ওড়িশার নানান নিসর্গে। ছোট্ট বা লম্বা ছুটিতে বেড়িয়ে পড়ুন। আজ প্রথম পর্ব।

পুরী

পুরী বেড়াতে যাননি, এমন পর্যটকের সংখ্যা হাতে গোনা। ওড়িশার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। সোজা চলে আসুন ‘গেটওয়ে অব হেভেন’ বা স্বর্গদ্বারে। কথিত আছে, স্বর্গদ্বারে স্নান করলে সব পাপ ধুয়ে যায়। নীল আকাশের নীচে, শান্ত সুনীল সাগরে স্নান সেরে নিন। ভারতের চারধামের অন্যতম হল পুরী বা শ্রীক্ষেত্র। প্রভু জগন্নাথের স্বভূমি। তাঁর মন্দিরের খ্যাতি জগৎজোড়া। এ বার চলে আসতে পারেন শ্রী শ্রী জগন্নাথের  মন্দিরে। রাজা যযাতি কেশরীর তৈরি মন্দিরটি ১১৯৮ সালে সংস্কার করেন রাজা অনঙ্গ ভীমদেব। আজকের মন্দিরটির তিনিই রূপকার। নীল পর্বতের ১০ একর জমির উপর মন্দিরটি শক্তপোক্ত প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। চারটি প্রবেশদ্বার। সিংহদ্বার, হস্তিদ্বার, অশ্বদ্বার, খাঞ্জাদ্বার। ২২টি সিঁড়ি বেয়ে মন্দিরপ্রাঙ্গন। যা ৪২৪x৩১৫ ফুটের বিশাল প্রাচীরে ঘেরা। মূল মন্দিরের গর্ভগৃহে শ্বেতবর্ণের বলরাম, পীতবর্ণের সুভদ্রা এবং কৃষ্ণবর্ণের প্রভু জগন্নাথ। বামে মহালক্ষ্মী, ডানে মহা সরস্বতী। তাঁরা প্রভু জগন্নাথের স্ত্রী। সবার পিছনে নীলমাধব।
প্রতি ১২ বছর অন্তর প্রভু জগন্নাথের নব কলেবর উৎসব পালিত হয়। পুরনো বিগ্রহকে বৈকুণ্ঠধামে সমাহিত করা হয়। মন্দির প্রাঙ্গনে রয়েছে ৫টি কুণ্ড। নরেন্দ্র, শ্বেতগঙ্গা, মার্কণ্ড, ইন্দ্রধনু, মহাবোধি। মুক্তি মণ্ডপ মহালক্ষ্মী মন্দির, সূর্যমন্দির আর প্রভু জগন্নাথদেবের রান্নাঘর। প্রবেশ নিষেধ। দিনে ৫ বার ৫৬ পদের ভোগ দেওয়া হয়। সাধারণ মানুষেরা প্রসাদ হিসেবে এই ভোগ পেয়ে থাকেন। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ৩৬০ টাকা। হিন্দু ছাড়া এই মন্দিরে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষের প্রবেশ নিষেধ। এ ছাড়াও দেখে নিতে পারেন গুন্ডিচা মন্দির। যা প্রভু জগন্নাথদেবের মাসির বাড়ি নামে পরিচিত। রথের সময় ৯ দিন এখানেই কাটান। প্রায় ১৫০ মঠ ও নানান মন্দির রয়েছে পুরীতে। বাকি সময় পুরীর সমুদ্রস্নানে,আড্ডায় মশগুল হয়ে থাকুন। কথায় আছে, তিন দিন তিন রাত পুরীতে কাটালে পুণ্যলাভ হয়।

জগন্নাথ মন্দির

কী ভাবে যাবেন:
কলকাতা থেকে পুরী যাওয়ার অনেক ট্রেন। দূরত্ব ৫০২ কিমি। ২২২০১ পুরী দুরন্ত এক্সপ্রেস (সোম, বুধ, শুক্র) ছাড়ে শিয়ালদহ থেকে। ১২৮২১ ধৌলি এক্সপ্রেস। ১৮৪০৯ জগন্নাথ এক্সপ্রেস। ১২৮৯৫ পুরী এক্সপ্রেস। ১২৮৮১ হাওড়া-পুরী গরিবরথ (মঙ্গল, বৃহস্পতিবার), ২২৮৩৫ শালিমার-পুরী, ছাড়ে প্রতি বুধবার।

পুরী থেকে চিলিকা
পুরী থেকে সাতপারার দূরত্ব ৫০ কিমি। মাঝপথে ব্রহ্মগিরিতে থামুন। দেখে নিন ‘আলারনাথ মন্দির’। পুরীতে জুন মাসে যখন মন্দির বন্ধ থাকে, তখন ভক্তরা এই মন্দির দর্শন করতে আসেন। এর পর সাতপারা পৌঁছন। এখান থেকে সরকারি বোটে চড়ে দেখে নিন সাতপাড়া ডলফিন পয়েন্ট। সমুদ্রে ভেসে এসে ডলফিনের দল চিলিকায় বাসা বেঁধেছে। সাতপারার চিলিকায় এদের দেখা মেলে। কখনও বোটের পাশাপাশি, কখনও নানান বিভঙ্গে কালচে শরীরটাকে শূন্যে ছুড়ে কসরত দেখতে হলে আসতে হবে চিলিকার সাতপাড়ায়।
 কোনারকের সূর্যমন্দির

কোনারক
ভারতের যে তিনটি শহরে সূর্যমন্দির রয়েছে কোনারক তার মধ্যে অন্যতম। মন্দির জুড়ে নানান মিথ। ইতিহাস বলছে, ১৩ শতকে গঙ্গাবংশীয় রাজা নরসিংহদেব কোনারকের মন্দির নির্মাণ করেন। ওড়িশা শিল্পশৈলীর এক অনুপম নিদর্শন। ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের মর্যাদাপ্রাপ্ত মন্দিরের গায়ে পাথরের সূক্ষ্ম খোদাই কারুকাজে মুগ্ধ হতে হয়। মন্দির পরিক্রমায় দেখে নিন সে যুগের নানান ঘটনাক্রম। শিকার দৃশ্য, নৃত্যরতা নারী, রাজসভার দৃশ্যাবলি, পৌরাণিক চিত্র, শিল্পমণ্ডিত রথচক্র-সহ দেবদেবী। প্রতিটি মূর্তি স্বতন্ত্র নন্দনতত্ত্বের সূক্ষ্ম অনুভূতির ছোঁয়া। পাথরে খোদিত হলেও তারা যেন প্রাণবন্ত।
আসুন, কোনারকের আশপাশটা একটু বেড়িয়ে নেওয়া যাক। এখান থেকে তিন কিমি দূরে চলে আসুন চন্দ্রভাগা সৈকত। পুরীর মতো অতটা জমজমাট না হলেও চুটিয়ে সমুদ্রস্নান উপভোগ করা যায়। এখানকার সূর্যোদয়ের বেশ খ্যাতি আছে। ৮ কিমি দূরে সাগর মিশেছে কুশভদ্রা নদীতে, সেই সঙ্গমস্থলে রামাচণ্ডী মন্দির। ১০ কিমি দূরের বিস্তীর্ণ বালুচরের বুকে কপিলেশ্বর মন্দিরটি অসাধারণ। ২৫ কিমি গেলেই কাকটপুর। প্রাচী নদীর পাড়ে মঙ্গলাদেবীর মন্দির। প্রভু জগন্নাথদেবের নবকলেবর উৎসবের আগে দেবী মঙ্গলা স্বপ্নাদেশে জানান দেন, দারুব্রহ্মের ঠিকানা। এ ছাড়াও অবধূতা মঠ, সান ডায়াল, লাইটহাউস দেখে নিন গাড়িভাড়া করে। হাতে একটা দিন সময় রাখুন। রাতে মায়াবী আলোকমালায় সেজে ওঠে কোনারকের মন্দির, স্তব্ধ প্রকৃতির মাঝে ইতিহাস যেন ফিসফাস কথা বলে।

কোনারক সূর্যমন্দিরে পাথরের সূক্ষ্ম খোদাই কারুকাজ।
 কী ভাবে যাবেন
পুরী থেকে কোনারকের দূরত্ব ৫৫ কিমি। বাসে অথবা গাড়িতে চলে আসা যায়।

আঙ্গুরের পরিচিতি

আঙ্গুর ফল প্রায় সবারই একটি পছন্দের ফল। সব ফলের মধ্যে আঙ্গুর ফল একটু অভিজাত বলেই গণ্য করা হয়। অন্যান্য ফলের চেয়ে আঙ্গুরের দামও বেশি। সুস্বাদু এই আঙ্গুর ফল দিয়ে ওয়াইন, রস, এবং জেলি-জ্যাম ইত্যাদি তৈরি করা ছাড়াও বাইরের বিভিন্ন দেশের নানারকম মুখরোচক রান্নায় এর ব্যবহার হয়। আর  একটা কথা জানেনই তো আঙ্গুর শুকিয়ে হয় কিশমিশ, যা ছাড়া আপনার শখের খাবারগুলো একদমই বেমানান।

আঙ্গুরের ইতিহাস

প্রায় আজথেকে ৬,০০০-৪,০০০ বছর আগে পৃথিবীর পূর্বাঞ্চলের দিকে আঙ্গুরের চাষ শুরু হয়। ৪,০০০ বছর আগে জর্জিয়ায় ওয়াইন তৈরির প্রমাণ খুব ভালভাবে পাওয়া গেছে। এর মানে হল আঙ্গুর অনেক পুরানো একটি ফল ও আঙ্গুরের তৈরি খাবারের ইতিহাস অনেক কালের পুরনো। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় যে,১৩০০ শতাব্দীতে পার্শিয়ানরা ভারতীয় উপ-মহাদেশে প্রথম আঙ্গুর চাষ প্রবর্তন শুরু করেন,যা পরবর্তীতে ভারতের দক্ষিনাঞ্চলে বিস্তার আকার লাভ করে।ভারতের দক্ষিনাঞ্চলের উঞ্চ আবহাওয়ায় আঙ্গুরের চাষ হলেও এতদিন বাংলাদেশে এখনও আঙ্গুর চাষে সফল হতে পারেনি।আঙ্গুর সাধারণত বিভিন্ন প্রকারের মাটি ও আবহাওয়া জন্মাতে পারে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সবুজ ,লাল, সাদা, কালছে খয়েরি এমন নানা রঙের আঙ্গুর জন্মায়। এমনকি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করার ফলে আজকাল বীচি ছাড়া আঙ্গুর জন্মানো হয়ে থাকে। সারা পৃথিবীর প্রায় ৭৫.৮৬৬ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে আঙ্গুর চাষ হয়ে থাকে। তবে মোট উৎপাদনের ৭১% ওয়াইন বানাতে,২৭% তাজা ফল হিসেবে এবং শুধু ২% শুকনো ফল হিসাবে ব্যবহার হয়। তাছাড়া কোথাও কোথাও এর পাতাও খাওয়া হয়।

আঙ্গুরের পুষ্টি উপাদান

আঙ্গুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। এগুলির মধ্যে রয়েছে বি ১, সি, কে ভিটামিন অন্যতম। এছাড়াও আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম ও খনিজ পদার্থ ম্যাঙ্গানিস। আঙ্গুর শুকিয়ে সাধারণত তৈরি হয় কিশমিশ এবং কিশমিশে রয়েছে ৬০ শতাংশ ফ্রুকটোজ।

আঙ্গুরের চমকপ্রদ স্বাস্থ্য উপকারিতা

১) ক্যানসার নিরাময়ে: আঙ্গুর সাধারণত আমরা জুস করে খেয়ে থাকি। আঙ্গুরের এই জুসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফামিটরির মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে, যা আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের প্রদাহ দূর করে থাকে। সাধারণত এই প্রদাহ ক্যান্সার রোগ জন্মের অন্যতম প্রধান কারণ।

২) ত্বককে সুরক্ষিত রাখে: আঙ্গুরে মধ্যে থাকা ফাইটো কেমিক্যাল ও ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট আমাদের ত্বকের সুরক্ষায় বিশেষ কাজ করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। এটি আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

৩) বয়সের ছাপে বাধা: আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিকেলস ত্বকে বলিরেখা ফেলে দেয়। আঙ্গুরে মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এই ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমাদের ত্বক ঠিক রাখে এবং শরীরে বয়সের ছাপ পড়া প্রতিরোধ করে।

৪) কিডনির ভাল রাখতে: আঙ্গুরের সব ভিটামিন উপাদানগুলো ক্ষতিকারক ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা সহনশীল অবস্থায় রাখে। সেই সঙ্গে আমাদের কিডনির রোগ-ব্যাধির বিরুদ্ধেও কাজ করে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে। এ ছাড়া আঙ্গুর আমাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রোধ করে।

৫) নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন: সাধারণত যারা রক্ত সঞ্চালনের ভারসাম্যহীনতায় ভোগেন  বিশেষ করে তাদের জন্য আঙ্গুরের জুস খুবই উপকারী। আঙ্গুরে মধ্যে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, যা আমাদের শরীরে নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনে সহায়ক ও ইনসুলিন বৃদ্ধি করে থাকে।

৬) ভুলে যাওয়া রোগ নিরাময়: আমরা অনেকেই ছোট ছোট বিষয়গুলো খুব দ্রুত ভুলে যায়। আবার দেখা যায় কোনো কথা বেমালুম স্মৃতি থেকে মুছে যায়। এটি সত্যিকার অর্থে এক ধরনের রোগ। এই ভুলে যাওয়া রোগটি নিরাময়ে আঙ্গুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

৭) স্তন ক্যান্সার নির্মূল: স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে আছেন যেসব নারীরা  তারা নিয়মিত খেতে পারেন আঙ্গুর। কেননা গবেষণায় দেখা গেছে আঙ্গুরের উপাদানগুলো স্তন ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষের বিরুদ্ধে কাজ করতে পুরোপুরি সক্ষম।

৮) চুলের যত্নে: চুলের একটু অযত্নেই আমাদের চুল খুশকিতে ভরে যায় এমন অনেকেই আছেন। এছাড়াও দেখা যায় চুলের আগা ফেটে গিয়ে রুক্ষ হয়ে পড়ে, ধূসর রঙের হয়ে যায় এবং শেষমেশ চুল ঝরতে থাকে। এইসব সমস্যার সমাধানে আপনি আঙ্গুর খেতে পারেন।

৯) কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে: আঙ্গুরে সাধারণত টরোস্টেলবেন নামে এক ধরনের যৌগ থাকে, যা আমাদের শরীরে কোলস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

১০) শরীরের হাড় শক্ত করে: আঙ্গুরে আছে প্রচুর পরিমাণে তামা, লোহা ও ম্যাংগানিজের মতো খনিজ পদার্থ থাকে, যা আমাদের শরীরের হাড়ের গঠন ও হাড় শক্ত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

১১) মাথাব্যথা দূর করতে: হঠাৎ করে মাথাব্যথা শুরু হয়ে গেলে আপনি ঔষধ না খেয়ে আঙ্গুর খেলে আরাম বোধ হয়।

১২) চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায়: আমাদের চোখ ভালো রাখতে আঙ্গুর অনেক বেশি কার্যকর। বয়সজনিত সমস্যার কারণে যারা চোখের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য অনেক বেশি উপকারী এই ফল।

১৩) অ্যাজমা প্রতিরোধ করতে আঙ্গুর: আঙ্গুরের ঔষধি গুনাগুন অনেক। আঙ্গুরের এই ঔষধি গুণের কারণে এটি অ্যাজমার ঝুঁকি থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে এবং আমাদের শরীরে ফুসফুসে আর্দ্রতার পরিমাণ বাড়ায়।

১৪) বদহজম দূর করতে: যদি নিয়মিত আঙ্গুর খাওয়া হয় তাহলে বদহজম অনেকাংশে দূর হয়। অগ্নিমন্দ্যা দূর করতেও আঙ্গুর অনেক বেশি কার্যকর।

ধর্মীয় মতানুসারে কিশমিশের উপকারিতা

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা. বলেছেন, তোমরা কিশমিশ বা আঙ্গুর খেতে একটুও অবহেলা করো না কেননা এই আঙ্গুর ও কিশমিশ আমাদের দেহমন ভাল রাখে । আঙ্গুর আমাদের স্নায়ুতন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং দুর্বল দেহকে চাঙ্গা করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। হাদিস শরীফে বলা হয়েছে, সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তার আগে খালি পেটে বীচি ছাড়া আঙ্গুর হতে তৈরি ২১টি কিশমিশ খেলে শারীরিক দুর্বলতা এবং আল জাইমার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়।
ইরানের স্বাস্থ্য চিকিৎসা বিষয়ক ওয়েব সাইটে প্রকাশিত একটা নিবন্ধে বলা হয়েছে যে, বীচিবিহীন আঙ্গুর থেকে যে কিশমিশ তৈরি হয় তা ক্যান্সার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আছে । এই জাতীয় কিশমিশ আমাদের রক্তনালীগুলোকে ফ্রি রেডিক্যাল থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, আমাদের রক্তনালীগুলোর কোমলতা বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। আঙ্গুর থেকে যে সব জিনিস বানানো হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো সিরকা।

আশা করি সবাই খুব ভাল আছেন।  আজ আমরা জানবো কিভাবে আপনারা কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করবেন। যারা নতুন এস.ই.ও শিখছেন তাদের জন্য এই পোস্টটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নতুনদের সহায়তা করার জন্য আজ আমি এই পোস্টতি করতেছি।
বেশির ভাগ কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলস টাকা দিয়ে ব্যবহার করতে হয় কিন্তু কিছু কিছু কি-ওয়ার্ড রিসার্চ টুলস আছে যা আপনি ফ্রী ব্যবহার করতে পারেন। Google Adwords keyword tool ফ্রী টুলস যেটা আমার কাছে সব থেকে পছন্দের। কিন্তু আপনি যদি আরো ভালো এবং আরো বিস্তারিত, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্লেষণ জানতে চান তাহলে আপনাদের আরো ভালো টুলস ব্যবহার করতে হবে নিচে তাই নিয়ে আলোচনা করবো।

Google Adwords <Signup>



Google Adwords এমন একটি ফ্রী টুলস যার মধ্যমে কি- ওয়ার্ড সম্পর্কে আমরা ভালো ধারণা নিতে পারি। এবার চলুন দেখি গুগল অ্যাডওয়ার্ড দিয়ে আমরা কিভাবে কাজ করতে পারি।
ব্যবহার: আপনি গুগল আডওয়ার্ড টুলস দিয়ে যেকোনো শব্দ কে দিয়ে রিসার্চ করতে পারেন এবং আপনি যে শব্দটাকে বাছাই করবেন সেই শব্দটাকে পে-পার ক্লিক এর মাধ্যমে প্রচারণা চালাতে পারেন।
বৈশিষ্ট্য: অ্যাডওয়ার্ড টুলস এর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে কি- ওয়ার্ড রিসার্চ করলে অনেক বেশি ইনফোমেশন পাবেন, যা বর্তমানে সব থেকে বড় সার্চ ইঞ্জিন গুগল থেকে পাওয়া।
সীমাবদ্ধতা: অ্যাডওয়ার্ড টুলস এ কিছু সীমাবদ্ধতাও আছে। আপনি যদি আপনার সাইট বা একটি নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড কিছু জানতে চান টা জানতে পারবেন কিন্তু অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে ওই কিওয়ার্ডটা কি পরিমান সার্চ হয় উপর তা জানতে চাইলে, আপনি এখানে পাবেন না।
মূল্য: অ্যাডওয়ার্ড টুলস সবার জন্য উন্মুক্ত। এটা ব্যবহার করতে হলে আপনার একটি জিমেইল একাউন্ট লাগবে।
গুগল আডওয়ার্ড টুলস একটি ভালো টুলস কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সাইটের জন্য প্রাথমিক টুলস।

Keyword Spy. <Signup>



Keyword Spy এস.ই.ও অপ্টিমাইজেশান টুল যা প্রাথমিক ভাবে কি- ওয়ার্ড রিসার্চ জন্য ব্যবহার করা হয়। চলুন দেখি Keyword Spy দিয়ে আমরা কিভাবে কাজ করতে পারি।
ব্যবহার: Keyword Spy কি- ওয়ার্ড রিসার্চ করলে অনেক কাজে দেয়। একানে আপনি আপনার নিজের সেইট এর জন্য কি- ওয়ার্ড রিসার্চ করতে পারেন।
বৈশিষ্ট্য: Keyword Spy এর আপনি নিদিষ্ট ভাবে প্রচারণা চালাতে পারেন। এখান থেকে আপনি যে কোনো আঞ্চলের কি- ওয়ার্ড রিসার্চ এর ইনফোমেশন পেতে পারেন।
সীমাবদ্ধতা: এটা ব্যবহারে তেমন কোনো সীমাবদ্ধতা নেই।
মূল্য: সাধারণ একাউন্ট মূল্য $89.95 প্রতি মাসে এবং প্রফেশনাল একাউন্ট মূল্য $139

SEO Book. <Signup>



SEO Book এস.ই.ও শেখার জন্য এটা হচ্ছে সব থেকে ভালো সাইট। এই সাইট আপনাকে কি- ওয়ার্ড রিসার্চ সাহায্য করবে।
ব্যবহার: SEO Book সাধারনত আপনাকে কি- ওয়ার্ড রিসার্চ এবং পে-পার ক্লিক রিসার্চ করতে সাহায্য করবে।
বৈশিষ্ট্য: এই টুল আপনাকে একটি ভালো কি- ওয়ার্ড সনাক্ত করতে সাহায্য করবে এবং আপনি জানবেন related keyword, long tail keyword, search density আরো অনেক কিছু জানতে পারবেন।
সীমাবদ্ধতা: এটা ব্যবহারে তেমন কোনো সীমাবদ্ধতা নেই।
মূল্য: SEO training program at SEO Book কে $300 প্রতি মাসে দিতে হবে।

পোষ্টটি ভালো লাগলে কমেন্ট এবং শেয়ার করে নিজেও জানুন এবং অন্যকে ও যানতে সাহয্য করুন।


সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদন বলছে বায়ুতে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ আবারও বেড়ে গেছে। এই নিয়ে প্রতিবছর মে মাসে পরপর কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পেতে বর্তমানে বায়ুতে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ রেকর্ড সংখ্যক।
গত মাসে (মে-তে) কার্বন ডাই অক্সাইডের গড় মাত্রা ছিল ৪১৪.৭ পার্টস পার মিলিয়ন। যা গত বছরের ওই সময়ের কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণের চেয়ে (৪১১.২ পিপিএম) ৩.৫ পিপিএম বেশি ছিল। আর ১১ই মে, ২০১৯ তারিখে পাওয়া গিয়েছিল বায়ুতে রেকর্ড সংখ্যক কার্বন ডাই অক্সাইড। এই প্রথমবারের মত বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৪১৫ পিপিএম ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
মেটেওরোলজিস্ট এরিক হলথাস টুইট করেছিলেন, “এই প্রথমবারের মত মানবেতিহাসে আমাদের গ্রহের আবহাওয়ায় ৪১৫ পিপিএম এরও বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড পাওয়া গেল। এটি কেবল ইতিহাসে সব থেকে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইডেরই রেকর্ড নয়, কেবল ১০,০০০ বছর পূর্বে কৃষির আবির্ভাবের পর থেকেই এটি বাতাসের সব থেকে বেশি পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড নয়, বরং আধুনিক মানুষের অস্তিত্বেরও লক্ষ লক্ষ বছর পূর্বেও বাতাসে এত বেশি পরিমাণে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ছিল না। আমরা এরকম গ্রহ চাইনা।”


এই উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে NOAA এর মনা লোয়া এটমসফেরিক বেজলাইন অবজারভেটরি থেকে যা হাওয়াই এর বিগ আইল্যান্ডে অবস্থিত। এখানে ৫০ এর দশক থেকে বিজ্ঞানীগণ বাতাসের মান পর্যবেক্ষণ করছেন।
প্রতিবছরে মে মাসেই বায়ুতে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ সব থেকে বেশি থাকে। এর আগের মাস বা ঋতুগুলোতে গাছপালা এবং মাটি কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ করতে থাকে যার ফলে সেগুলো জমতে জমতে মে মাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ সর্বোচ্চ হয়। মে এর পরের মাসগুলোতে গাছপালার কারণে আবার কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ কমতে শুরু করে। তাই মে মাসেই প্রতি বছরে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণের সর্বোচ্চ মানটি পাওয়া যায়।
NOAA এর গ্লোবাল মনিটরিং বিভাগের সিনিয়র সাইন্টিস্ট পিয়েটার ট্যানস বলেন, “জীবাশ্ম জ্বালানী কত দ্রুত আমাদের পরিবেশকে পরিবর্তন করে ফেলছে তা বোঝার জন্য কার্বন ডাই অক্সাইড এর সঠিক ও দীর্ঘমেয়াদী পরিমাপ করা খুবই দরকার। এগুলো হল আসল আবহাওয়ার পরিমাপ। এগুলো কোন মডেল এর উপর নির্ভর করে না, কিন্তু আমাদেরকে জলবায়ুর মডেল ভবিষ্যদ্বাণীগুলোর সত্যতা নিরুপন করতে সহায়তা করে।”
বিভিন্ন চলক ও ফিডব্যাক লুপের কারণে ভবিষ্যতের জলয়ায়ু পরিবর্তনের ভবিষ্যদ্বাণী করা খুব কঠিন। সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো বলছে আগের হিসাবগুলো খুব রক্ষণশীল ছিল এবং তাই তারা ভুলও করেছে। গত বছর, ইন্টারগভার্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ বা আইপিসিসি একটি মাইলফলক প্রতিবেদন তৈরি করেছিল, যেখানে ২১০০ সালের আগে প্রি-ইন্ডাস্ট্রিয়াল লেভেলের চেয়ে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে কী বিপর্যয়কারী পরিণাম দেখা যাবে তা নিয়ে সতর্ক করেন, সেই সাথে সেখানে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে কী হবে সেটাও বলা হয়।
এরই মধ্যে কিছু অতি সাম্প্রতিক জলমায়ুর মডেল ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে এই শতকের মধ্যেই আমাদের জলবায়ুর তাপমাত্রা ৩ থেকে ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রেরই বছরে ২৩ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হবে (যা বর্তমান বিশ্বের সম্পূর্ণ জিডিপির এক তৃতীয়াংশ, এবং ২১০০ সালে বৈশ্বিক জিডিপি এর ৭ শতাংশেরও বেশি হবে)।
এই খবরগুলো শোনার পরও যদি আপনার পা থরথর করে না কাপে তাহলে আরেকটি প্রতিবেদনের কথা শুনুন। এই সপ্তাহেই একটি থিংট্যাংক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানে বলা হচ্ছে, যদি খুব দ্রুত কোন জরুরি পদক্ষেপ নেয়া না হয় তবে ২০৫০ সালে মানব সভ্যতার ধ্বংস হয়ে যাবার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে!!
শিল্প বিপ্লবের সময়ের পর থেকে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ১৪০ পিপিএম বেড়ে গিয়েছে। ১৭০০ সালে এর পরিমাণ ছিল ২৭৫ পিপিএম, এবং গত দুই বছরের বাতাসে ৫ পিপিএম পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে গত ৮০০,০০০ বছরেরও অধিক সময় থেকে এখন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এই সময়েই বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ সব থেকে বেশি। বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের বৃদ্ধি এই হাড়ে চলতে থাকলে, অনেকে ভবিষ্যদ্বাণী করেন, এই শতকের শেষের দিকেই বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ১,০০০ পিপিএম কার্বন ডাই অক্সাইডে গিয়ে ঠেকবে।
এ প্রসঙ্গে জেনে রাখা ভাল যে, শেষ যেবার বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ১,০০০ পিপিএম ছিল, সেবার এন্টার্কটিকা মহাদেশে বনাঞ্চল ছিল, এবং পশ্চিম ইউরোপ ও নিউজিল্যান্ডে বাৎসরিক তাপমাত্রা এখন যা দেখা যায় তার থেকে ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশি ছিল। এই পরিস্থিতি ছিল আজ থেকে ৫৬ থেকে ৪৮ মিলিয়ন বছর পূর্বে প্যালিওজিন পিরিয়ডের সময়।
সেই সময় থেকে ৪৫ মিলিয়ন বছর পরবর্তী সময়ে গ্রহটি ছিল প্লিওসিন যুগে, তারপর সিএনএন রিপোর্ট অনুযায়ী বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৩১০ থেকে ৪০০ পিপিএম এর মধ্যে চলে আসে। অর্থাৎ, বর্তমানে বাতাসে যে পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড দেখা যাচ্ছে সেসময় কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ তার থেকেও কম ছিল। আর তখনও বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা আজকের তাপমাত্রার চেয়ে ২ থেকে ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশি ছিল। সেইসময় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ছিল আজকের সমুদ্রপৃষ্ঠের থেকেও ২৫ মিটার বা ৮২ ফুট উঁচুতে।
মনা লোয়ায় বছরের পর বছর ধরে সংগৃহীত উপাত্তগুলো দেখাচ্ছে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ স্থিতিশীলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। শুরুর দিকে প্রতি বছরে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড গড়ে ০.৭ পিপিএম হাড়ে বৃদ্ধি পেত। আশির দশকে দেখা গেল প্রতি বছরে গড়ে ১.৬ পিপিএম হারে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নব্বই এর দশকে এই বৃদ্ধির হার একটি কমে গেল, তখন বছরে ১.৫ পিপিএম হাড়ে কার্বন ডাই অক্সাইড বৃদ্ধি পেত। একবিংশ শতকের শুরুর দিকে এই হাড় পুনরায় বৃদ্ধি পায়, প্রতি বছর কার্বন ডাই অক্সাইড বৃদ্ধির হার বছরে ২.২ পিপিএম-এ গিয়ে পৌঁছায়। ২০১৪ সালের মে মাসে কার্বন ডাই অক্সাইড এর পরিমাণ প্রথমবারের মত ৪০০ ছাড়িয়ে যায়।
ট্যান্স বলেন, এই বিষয়ে যথেষ্ট পরিমাণে ও উপসংহার টানার মত সাক্ষ্যপ্রমাণ আছে যে বর্ধিত পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইডের নিঃসরণের কারণেই বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড বৃদ্ধির হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যদিও এই কথাগুলো আসলে পরিসমাপ্তি বা ডুমসডে এর মত শোনালেও গবেষকগণ বলছেন, এখনও আমাদের কিছু করার সময় রয়েছে। ইউএন এনভায়রনমেন্ট ডেপুটি এক্সেকিউটিভ ডিরেক্টর জয়েস মোসুইয়া বলেন, “বিজ্ঞান এখানে পরিষ্কার, আমরা এপর্যন্ত জলবায়ু সম্পর্কিত উচ্চাকাঙ্ক্ষী কার্যক্রম দেখেছি সরকারগুলোকে এর চেয়েও বেশি দ্রুতগতিতে এবং আরও গুরুত্বের সাথে এটি নিয়ে কাজ করতে হবে।… আগুন নেভানোর উপকরণ যেখানে আমাদের হাতের কাছেই আছে সেখানে আমরা আগুনে আরও জ্বালানী দিচ্ছি।”

 
আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে কোনো একটা সমস্যা হচ্ছে – সেটা যেকোনো প্রকারেরই হোক না কেন… সমস্যাটার সমাধান খুঁজছেন আপনি। ওয়ার্ডপ্রেসের সাইটে কোনো সমস্যা কেন হচ্ছে তা জানার কিছু প্রাথমিক পদক্ষেপ আছে। এই গ্রুপে প্রশ্ন করার আগে, আমরা ধরে নিব, আপনি এই প্রাথমিক পদক্ষেপগুলো পার করেছেন, তারপর প্রশ্নটি করছেন:
  • প্লাগইন নিষ্ক্রীয় করুন: সব প্লাগইন নিষ্ক্রীয় (Deactivate) করুন (কারণ কোনো একটা প্লাগইন থেকে সমস্যাটা সৃষ্টি হতে পারে)
  • ডিফল্ট থিম সক্রীয় করুন: অন্য সব থিম বাদ দিয়ে ওয়ার্ডপ্রেসের সাথে দেয়া ডিফল্ট থিম চালু করুন (সেটা যেকোনোটা হতে পারে, TwentyFifteen কিংবা এরকম কোনো একটা)
  • ডিবাগ চালু করে নিন: wp-config.php ফাইলে define( ‘WP_DEBUG’, false );-কে define( ‘WP_DEBUG’, true ); করে নিন
  • ব্রাউযারের ক্যাশ পরিষ্কার করুন: আপনার ব্রাউযারের ক্যাশ (cache) পরিষ্কার করুন
Chrome-এ Ctrl+Shift+Del > The beginning of time > Cached images & files > Clear browsing data
Firefox-এ Ctrl+Shift+Del > Everything > Cache > Clear Data
Opera-তে Ctrl+Shift+Del > The beginning of time > Empy the cache > Clear browsing data
এই কাজগুলো করা হলে আপনি একটা ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের একেবারে ডিফল্ট অবস্থায় চলে এলেন, এবারেও যদি সমস্যাটা থেকে থাকে, হয়তো তা ওয়ার্ডপ্রেসের কোনো ত্রুটি। কোনো ত্রুটি বার্তা (error message) দেখালে সেটা অনুসরণ করে সমস্যার মূল জায়গায় যান, সমাধান করুন। যদি কোনো ত্রুটি বার্তা না দেখায়, তাহলে:
  • আগে এই প্রোজেক্টের সবকিছুর একটা ব্যাকআপ নিন, এরপর
  • অ্যাডমিন প্যানেলের Dashboard > Updates পাতায় যান, এবং
  • Re-install Now বোতামে ক্লিক করে ওয়ার্ডপ্রেস পুণরায় ইন্সটল করে নিন
আশা করি ওয়ার্ডপ্রেস সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হলে এপর্যায়ে সমাধান হয়ে যাবে।
আর যদি সার্ভার সংক্রান্ত (সার্ভার কনফিগারেশন, সার্ভার প্রিভিলিজ ইত্যাদি) কোনো সমস্যা হয়ে থাকে, তাহলে এপর্যায়ে সেগুলোর কারণে সমস্যা হতে পারে। (একটা ব্যাপার নিশ্চিত, কোনো থিম বা প্লাগইন থেকে হচ্ছে না, কারণ সেগুলো নিষ্ক্রীয়)। কোন থিম বা কোন প্লাগইন সমস্যা তৈরি করছে, সেটা বের করতে, একটা একটা করে প্লাগইন চালু করুন, এবং দেখুন সমস্যাটা কোন প্লাগইন চালু করলে দেখা যাচ্ছে। ফিক্স করতে পারলে করুন, নয়তো প্লাগইন বদলে ফেলুন।
*একই প্রক্রিয়া থিমের জন্যও প্রযোজ্য।
তারপরও সমস্যার সমাধান না হলে, কিংবা সমস্যাটি ধরতে না পারলে, কিংবা সনাক্ত করা সমস্যাটা সমাধান করার উপায় না পেলে:
  1. নিজে ঘাঁটুন
  2. গুগল করুন (ইংরেজিতে এবং/অথবা বাংলায়)
  3. WordPressians গ্রুপের মতো গ্রুপগুলোতে জিজ্ঞাসা করতে পারেন
  4. অনলাইনে অনেক ফোরাম আছে, যেখানে জানতে চাইতে পারেন
তবে সর্বক্ষেত্রেই সমস্যাটা আগে নিজে বুঝুন, কারণ প্রশ্ন করার সময় বিস্তারিত আপনাকে লিখতে হবে। কেউ আপনার সমস্যার মধ্যে নেই, অন্যকে বিস্তারিত লিখে আপনার সমস্যাটি বুঝাতে হবে।

যারা ব্লগ বা ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করছেন তাদের কাছে প্রধান বিষয় হলো সাইটে ভিজিটর আনা। তবে ভিজিটর আনার বিষয়ে বিভিন্ন বিষয় না জানা অথবা নতুনদের ক্ষেত্রে অনেক ভুল হয়ে থাকে। যে ভুলগুলো সাইটে কাংখিত ভিজিটর বা ট্রাফিক আনতে ব্যার্থ হয়। মাঝে মাঝে আমরা সাইটে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তণ আনি। তবে সাইটের এসইও সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকলে অনাকাংখিত ভুলে ট্রাফিক হারিয়ে যায়। এ ভুলগুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা প্রয়োজন। এখানে আমি তেমনি ১১টি গুরুতর ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা করছি। যেগুলোর মাধ্যমে আপনি পুরাতন ভিজিটর বা কাংখিত নতুন ভিজিটর পেতে পারেন।

১. ৩০১ রিডাইরেক্টশন ছাড়াই পার্মালিংক চেঞ্জ করা


একটা ওয়েবসাইটের এসইও এর জন্য পার্মালিংক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যদি একটি নতুন ব্লগ সাইট শুরু করেন সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই একটি ক্লিন পার্মালিংক ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তবে সমস্যা হলো, পুরাতন ব্লগের পার্মালিংক পাল্টালে। আপনার সাইটের যদি পোস্ট সংখ্যা খুবই কম হয় তাহলে এটি কোনো বিষয় নয়! আপনার সাইটের পার্মালিংক পাল্টালে আগের পোস্টলিংকগুলো নতুন করে ইনডেক্স হয়, সেক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আপনার পোস্টলিংকগুলো আর কাজ করবে না। ফলে আপনি ঐ লিংক থেকে ভিজিটরগুলো হারাবেন।

তবে এই সমস্যার সমাধানও আছে। আমরা একটি পার্মালিংক থেকে অন্য পার্মালিংকে মাইগ্রেট করার প্লাগইন ব্যবহার করতে পারি।এক্ষেত্রে অবশ্যই ৩০১ রিডাইরেক্টশন ব্যবহার করবেন। ৩০১ রিডাইরেক্টশন চেকারের মাধ্যমে আপনি সহজেই আপনার রিডাইরেক্ট হওয়া পার্মালিংকগুলো চেক করতে পারবেন। অবশ্যই সবথেকে ভালো পার্মালিংক ব্যবহারে সচেষ্ঠ থাকবেন এবং এটি পরবর্তীতে আর পাল্টানোর কথা চিন্তা করবেন না। আর হ্যা, পার্মালিংক পাল্টালে অবশ্যই সাইটম্যাপ রিজেনারেট করবেন সার্চ ইঞ্জিনে সাবমিট করবেন।

২. সাইটম্যাপ মিসিং

আমরা সবাই জানি, কোনো সাইটের বিভিন্ন পোস্ট সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স করার জন্য সাইটম্যাপের ভূমিকা অত্যাধিক। আপনি অবশ্যই আপনার সাইটের সাইটম্যাপ সম্পর্কে নিশ্চিত থাকবেন এবং সেটিতে যেনো আপনার সব পোস্টের লিংক থাকে। সাইটম্যাপ হিসেবে গুগল এক্সএমএল সাইটম্যাপ ও ওয়ার্ডপ্রেস এসইও প্লাগইন খুবই জনপ্রিয়। প্রয়োজনে আপনি ছবি ও ভিডিও ইনডেক্সের জন্য এ ধরনের প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন। আপনার সাইটে যদি বেশি পরিমানে ভিডিও থাকে তাহলে আপনি ইয়স্ট ভিডিও এসইও প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন। আপনার সাইটের ফুটারে সাইটম্যাপ লিংকও রাখতে পারেন, এটি সার্চ ইঞ্জিনকে অতি সহজেই সাইটম্যাপ বুট করার কাজে সহায়তা করেব। আপনাকে অবশ্যই সাইটম্যাপে কোনো লিংক মিসিং হচ্ছে কিনা সেটি কিছুদিন পরপর পরীক্ষা করা উচিত। প্রয়োজনে সাইটম্যাপটি আনাচেক করে পুনরায় চেক করতে হবে।

৩. এইচটিএক্সেস ফাইল


পার্মালিংক রিডাইরেক্টশন অথবা এইচটিএক্সেস অপটিমাইজেশন সমাধানের জন্য কিছু ব্লগার এইচটিএক্সেস ফাইল পরিবর্তনের কথা জানান। এটি একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ফাইল, তাই এই ফাইলটি পরিবর্তনের সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। পরিবর্তণ করতে চাইলে অবশ্যই আগে এই ফাইলটির ব্যাকআপ নিয়ে নেবেন। এই ফাইলে কোনো ধরনের মিসিং হলে শুধু ট্রাফিক নয়, আপনার সাইটটি ডাউন হয়ে যেতে পারে। আপনি যদি এইচটিএক্সেস ফাইল পরিবর্তনের জন্য মেটা রোবট প্লাগইন ব্যবহার করে থাকেন, তবে অবশ্যই আপনার সিপ্যানেল বা এফটিপিকে কোনো পরিবর্তণ আনডু করার ব্যবস্থা রাখবেন।

৪. রোবট.টেক্সট ফাইল


রোরট.টেক্সট কোনো সাইটের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল। যখন সার্চ ইঞ্জিন বট আপনার ব্লগে আসে, তখন এই ফাইলই নির্ধারণ করে সার্চ ইঞ্জিন কোন পোস্ট বা পেজ ইনডেক্স এবং ক্রল করবে। তাই আপনার সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে ভালো অবস্থানে রাখতে অবশ্যই রোবট.টেক্সট ফাইলকে ভালোভাবে অপটিমাইজ করবেন। কখনোই বেশিরভাগ ফাইল বা পেজকে ডিজঅ্যালাউ করে রাখবেন না।

৫. থিম কাস্টোমাইজেশন

আপনি যখন আপনার সাইটের থিক কাস্টোমাইজেশন করবেন তখন অবশ্যই এগুলো একটি ডকুমেন্ট রেখে দেবেন। পরবর্তীকে কোনো সমস্যা হলে আপনি এই পরিবর্তনগুলো সহজেই চিহ্নিত করে আগের অবস্থায় নিয়ে আসতে পারবেন। কারণ ফ্রি থিমগুলোর ক্ষেত্রে অনেক সময় আপনার ব্যবহৃত প্লাগইনের সামঞ্জস্য না থাকায় সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কিছু কিছু প্লাগ-ইন ব্যবহারের ক্ষেত্রে এটি বাধ্যতামূলক করেও থাকে।

৬. ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগইন


আপনার সাইটে অবশ্যই প্রয়োজনীয় প্লাগইন ছাড়া অহেতুক কোনো প্লাগইন ব্যবহার বা ইনস্টল করে রাখবেন না। অনেক সময় অনাকাংখিত প্লাগইন বা প্লাগইনের ব্যবহার বেশি হলে সাউটের লোডিং টাইম বেশি হয়ে যায়। যা ভিজিটর হারানোর ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। তাই কোনো প্লাগইন ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই এটির রিভিউ পড়ে নিবেন এবং এটি আপনার সাইটে সাপোর্ট করবে কিনা সেটি পরীক্ষা করে নিবেন।

৭. এসইও টাইটেল ও ডেসক্রিপশন

আপনি যদি অল ইন এসইও, ইয়স্ট ওয়ার্ডপ্রেস এসইও বা অন্যকোনো  জনপ্রিয় এসইও প্লাগইন ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই এসইও টাইটেল এবং মেটা ডেসক্রিপশনের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। অন্যথায় সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে থাকা আপনার জন্য কষ্টকর হয়ে যেতে পারে।

৮. থিম পরিবর্তণ

অনেকেই কারণে অকারণে থিম পরিবর্তণ করেন। আপনার সাইটের বিষয়বস্তুর সাথে মানানসই একটি ফ্রি অথবা প্রিমিয়াম থিম যেমন জেনেসিস বা থিসিস থিম ব্যবহার করতে পারেন। ফ্রি থিম বা প্রিমিয়াম থিম নিয়ে বিতর্কে যেতে চাই না, তবে প্রিমিয়াম থিমে অনেক ধরনের অ্যাডভানটেজ বা বাড়তি ফিচার থাকে। ইনস্টল করার আগেই থিটিতে কোনো ক্ষতিকর ফাইল বা স্পাইওয়ার, ভাইরাস, স্প্যাম ফাইল না থাকে সেটি পরীক্ষা করে নিবেন।

৯. ব্লগ সিকিউরিটি

যে বিষয়টি বলছিলাম, আপনি যদি ফ্রি থিম ব্যবহার করে থাকেন তবে আগেই এটিতে মেলিসিয়াস বা স্প্যাম ফাইল আছে কিনা সেটি পরীক্ষা করে নিবেন। কারণ অনেক ক্ষেত্রে এ ধরনেই ফাইল আপনার সাইটের ভিজিটরদেরকে অন্য সাইটে রিডাইরেক্ট করে দিতে পারে। তাই আপনার সাইটের সিকিউরিটির বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ট্যাক (থিম অথেনটিসিটি চেকার) প্লাগইনটি ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া সিকিউরিটি প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন।

১০. এসইও পরিবর্তণ

আপনি আপনার ব্লগে যে এসইও প্লাগইন ব্যবহার করেন না কেনো এটি পরিবর্তণ করতে যাবেন না। যদি আপনি আরো ভালো প্লাগইন বা প্লাগইনের পরিবর্তে ভালো পেইড থিম ব্যবহার করতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই নিশ্চিত থাকবেন যে আপনার এসইও টাইটেল ও মেটা ডেসক্রিপশন যেনো ঠিক থাকে। কারণ এটির পরিবর্তণ হলে আপনার সাইটের ট্রাফিকের ক্ষেত্রে বিরুপ প্রভাব ফেলবে।

১১. ব্লগ ব্যাকআপ

বিপদ কখনো বলে কয়ে আসে না! তাই আপনার সাইটের কোনো ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেতে নিয়মিত সাইটের ব্যাকআপ রাখুন। ফলে প্রয়োজনে আপনি সহজেই আপনার সাইট রিস্টোর করতে পারবেন। ব্যাকআপ রাখার জন্য অনেক উপায় আছে। আমি সাজেষ্ট করবো আপনি সম্ভব হলো দিনে একবার অথবা প্রতি সপ্তাহে আপনার সাইটের ম্যানুয়ালি অথবা অটোমেটিক ব্যাকআপ রাখুন। প্রিমিয়াম এর দিকে গেলে আমি অবশ্যই ভল্টপ্রেস সাজেষ্ট করবো। এটি একসাথে আপনার সাইটের সিকিউরিটি ও অটোমেটিক ব্যাকআপ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
নতুন ব্লগারদের ক্ষেত্রে মুলত এ ধরনেই সমস্যাই বেশি দেখা দেয়। এছাড়া আরো অনেক বিষয় রয়েছে। এগুলো মেনে চলা উচিত। এসব সমস্যা এড়িয়ে আপনার সফলতা এগিয়ে আসুক সেটিই প্রত্যাশা করি..  খুব শীগ্রই নতুন কোনো বিষয় নিয়ে আসবো, তাই পান্ডুলিপির সঙ্গেই থাকুন।

MKRdezign

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget